হেমন্তের সকালে শিশিরে ভেজা নিথর দূর্বাঘাস। ভোরের শিশির আগাম জানান দিচ্ছে শীত আসছে, কুয়াশা ভেদ করে পূর্বাকাশে সূর্য মামা উঁকি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে উত্তর থেকে মৃদু ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ধানের কচি ডগার ওপর মুক্তা দানার মতো জমেছে বিন্দু বিন্দু শিশির- সেই সাথে হালকা কুয়াশায় ঘেরা প্রকৃতি আর ভোরের শিশির জানান দিচ্ছে শীত আসছে।
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত শীতকাল হিসেবে ধরা হলেও এই বছর নভেম্বর মাসের শুরু থেকেই দেশের উপকূলীয় অঞ্চল সহ বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। শীতের আগমনে প্রকৃতি সেজে ওঠে ভিন্ন এক আমেজে। শীত আসলেই গরম গরম খাবারের কদর যেন বেড়ে যায়। শীতের সকালে বাড়ীর উঠোনে রোদ পোহানো, গরম জলে স্নান, শীত নিবারণে বাড়তি পোশাক আর রাতের বেলা কাঁথা, কম্বল বা লেপের ভাঁজ খুলে বেরিয়ে আসা রোদগন্ধ যেন ভিন্ন আমেজে শীত আরও বেশী উপভোগ্য করে তোলে।
সন্ধ্যায় রাস্তার ধারে ছোট ছোট টং এর দোকানে বাহারি পদের পিঠা আর ভর্তা খেতে ভীড় জমে ওঠে। সকাল শুরু করে বাহারি ভর্তা আর গরম ভাত খাবার ধুম। এ আমেজ শুধু শীত ঋতুতেই দেখা যায়।
পৃথিবীর নানা দেশে থেকে আসে অতিথি পাখি। বাংলাদেশে অতিথি পাখিদের অস্থায়ী বাস হিসেবেও ধরা হয়ে থাকে। তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতেই তারা আশ্রয় নিয়ে থাকে। উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা মেলে বাহারি রংবেরঙের পাখিদের আনাগোনা। শীতকালে বিল-ঝিল তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে। গাঙচিল, পানকৌড়ি, চ্যাখা, টিকি হাঁস সহ জানা অজানা নানা জাতের পাখির ঝাঁক বিলের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়।
দিনে বেলায় গরম, রাতে শীতল হাওয়া আর ভোরের ঘন ঘন কুয়াশা বলে দেয় শীত যেন কাছাকাছি। উপকূলের গ্রামাঞ্চলে একটু বেশি শীত পড়তে শুরু করেছে। উপকূলীয় অঞ্চল বরগুনার আমতলী, তালতলীতেও এখনও সেভাবে শীত অনুভূত না হলেও সন্ধ্যা আর শেষ রাতে শীতের আভাস টের পাওয়া যাচ্ছে।