বাংলাদেশে ধীরে ধীরে কমছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গেল সেপ্টেম্বর মাস থেকেই সংক্রমণ কমার এই প্রবণতা দেখা যায়। অক্টোবরে একই ধারা অব্যাহত থেকে দৈনিক শনাক্ত নেমে আসে দুইশোর নিচে, যা গত বছর ১৬ হাজার পার হয়েছিল। গত দুই মাস ধরে শনাক্ত কমার পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যু নেমে পাঁচের নিচেও নামে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ৬০৬ তম দিনে এসে গত এক দিনে শনাক্ত হয়েছেন ২৫৬ জন। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৩৩ জেলা থেকে তারা শনাক্ত হন। অর্থাৎ গত এক দিনে ৩১ জেলায় করোনা আক্রান্ত নেই। গত এক দিনে শনাক্তের হার ১.৩১ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ২৭ হাজার ৮৮০ জনের। গত ৫ আগস্ট দেশে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন রোগী মারা যায়। গত ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ শনাক্ত হয় ১৬ হাজার ২৩০ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় (অ্যান্টিজেন টেস্টসহ) ১৯ হাজার ৫২৩টি পরীক্ষায় ২৫৬ জন এই ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন। এই সময়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার এক দশমিক ৩১ শতাংশ।
তবে শুরু থেকে মোট পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০৯ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত ৭৫ লাখ ৫১ হাজার ২৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯২২টি নমুনা। অর্থাৎ মোট পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি চার লাখ নয় হাজার ১৫৮টি নমুনা। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৭০ হাজার ২৩৮ জন। তাদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ২৩৭ জনসহ মোট ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৭৩ জন সুস্থ হয়েছেন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে সাতজন মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দু’জন নারী। তাদের মধ্যে সবার হাসপাতালে (সরকারিতে দু’জন ও বেসরকারী হাসপাতালে একজন) মৃত্যু হয়েছে। মোট শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৮৪৭ জন পুরুষ মারা গেছেন যা মোট মৃত্যুর ৬৪ দশমিক ০১ শতাংশ এবং ১০ হাজার ৩৩ জন নারী মৃত্যুবরণ করেছেন যা মোট মৃত্যুর ৩৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত সাতজনের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব দু’জন, ষাটোর্ধ্ব একজন, সত্তোরঊর্ধ্ব একজন, আশিঊর্ধ্ব দু’জন ও নব্বইঊর্ধ্ব একজন।
আর বিভাগওয়ারী হিসাবে ঢাকা বিভাগে তিনজন, চট্টগ্রাম বিভাগে একজন, রাজশাহী বিভাগে একজন, খুলনা বিভাগে একজন ও সিলেট বিভাগে একজন।
করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২২২টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ২৪ কোটি ৮৪ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৫০ লাখ ৩১ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২২ কোটি ৫১ লাখের বেশি।