হরতাল
মুখে হাসি হাতে পেন
চোখ নাচে ছন্দে
দাদা বলে, শোন ভাই
ভালো কাজে মন দে।
কথা কম কাজ বেশি
বাকি সব বাদ দে
স্বপ্নের কারিগর
গরীবের ছাদ দে।
ছোটদের ভালোবেসে
বড়দের মান দে
দেরি কেন সব কাজে
বুদ্ধিতে শান দে।
যারা লোভী তারা বলে
টাকাকড়ি ধন দে
জীবনটা সুখ নয়
ভালো আর মন্দে।
শেষে বলি বেশি জেনে
পড়ে যাবি দ্বন্দ্বে
চোখে দেখি ঘুম নেই
বাংলায় বনধে।
তিন বোন
ইন্নি বিন্নি তিন্নি, তিন বোন যেন গিন্নি
খেলার ছলে কাদামাটি মেখে
বানাবে পুজোর শিন্নি।
শিন্নিতে চাই দুধ কলা আর সামান্য কিছু চিন্নি
বিড়ালকে ডেকে ইন্নি বলল,
দোকানে চলে যা মিন্নি।
বিন্নি বলল বিড়াল খোকা, বুঝবেনা বেশি কথা
কেবল বোঝে দুধের বাটি,
মাছের বড় মাথা।
শিন্নি করা বন্ধ হলো, তিন্নি বলে হেসে
এমন অনেক বিড়াল বাবু
আছে তো এই দেশে।
সবার কথার মধ্যে দেখি , ম্যাও ম্যাও করে মিন্নি
তিন বোন বলে, বিড়াল কথা
থাকবে চিরদিন্নি!
নদীর ব্যথা
একটা নদী তাকিয়ে আছে
দূর আকাশের দিকে
আকাশ বলে, ছোট্ট নদী
মুখ কেন তোর ফিকে?
নদীর জলে টেউ ওঠে না
বাক্য তো নেই মুখে
আকাশ বলে, সব বুঝেছি
জল নেই তোর বুকে।
সময় যাচ্ছে জলের মত
সবাই যেন থেমে
আকাশ, নদী মুখোমুখি
সন্ধ্যা এলো নেমে।
আকাশ বলে, চুপটি কেন
একার মত চলা
দুঃখ নিয়ে তোর কাছে তো
দু-এক কথা বলা।
ভরসা দিলে সঙ্গে আছি
কষ্ট কিসের মনে
তুই তো চাইলে যেতেই পারি
সারাজীবন বনে।
নদী বলে, বুঝিস তো সব
দিস না কেন তবে
বল্ না আকাশ, শ্রাবণধারায়
বৃষ্টি পাব কবে?
নিরুদ্দেশে
ভোরবেলাতে গান ধরেছে
খাঁচায় পোষা বুলবুলি-
তুলতুলি রে তুলতুলি
চল্ না রে বোন দু’জন মিলে
মেঘমুলুকে ফুল তুলি!
ফুল তুলি?
আমি তো রোজ দাদুর মাথার
পাকা পাকা চুল তুলি!
আমার তো নেই ওড়ার ডানা-
বল্ না পাখি কেমন করে
মেঘমুলুকে ফুল তুলি?
তুলবো রে ফুল হেসে-
ইচ্ছে-ডানায় স্বপ্ন মেখে অনেক দূরে ভেসে,
মেঘ মুলুকের দেশে,
ঘুমিয়ে নেব আয়েস করে
মেঘবালিকার কেশে।
ইচ্ছে তো হয়, একটু খানি হারাই নিরুদ্দেশে!
মায়ের স্মৃতি
ঘরের দাওয়ায় ছড়িয়ে আছে
মায়ের পায়ের ধুলো,
সেই ধুলোতে জড়িয়ে আছে
সুখের সে দিনগুলো-
মা ডাকছে, ভোর হয়েছে
গাইছে কোকিল গান,
পড়তে এবার বসতে হবে
বই-খাতা সব আন।
মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙে যায়
বিছ্না ছেড়ে বসি,
ভোরের হাওয়ায় ঘুম ছাড়েনা
দুই হাতে চোখ ঘসি।
মা চলে যায় ঠাকুর ঘরে
শঙ্খ-কাঁসি বাজে,
হয়তো তখন মগ্ন আমি
লাটাই খোঁজার কাজে।
সাত সকালে বাবার অফিস
রান্না করার তাড়া,
কাজের ফাঁকে মা বললো
‘নেই কেন রে সাড়া’।
তখন আমি দিচ্ছি সাড়া
সবুজ-শ্যামল মাঠে,
ভাল্লাগে না একলা ঘরে
মন বসে না পাঠে।
হারিয়ে গেছে সুখের সেদিন
অ-নে-ক অ-নে-ক দূরে,
মা’তো এখন কাচের ছবি
হৃদয় আসন জুড়ে।
ছড়ার মুলুক
একটা ছড়া আসি-ভাসি, ইচ্ছে সবুজ ডানা
অন্য ছড়া চোখ রাঙানি, সবকিছুতেই মানা!
একটা ছড়া মাসি-পিসি, আদর-স্নেহের দোলা
অন্য ছড়া পড়ার রুটিন, যায় না মোটে ভোলা!
একটা ছড়া খুশি-খুশি, আকাশ-বাতাস-মেঘে
অন্য ছড়া বন্দী পাখি, খাঁচায় একা জেগে!
একটা ছড়া জুটি-জুটি, সবার মাঝে জুটি
অন্য ছড়া হাত বাড়িয়ে খুঁজছে লুটোপুটি!
একটা ছড়া লুচি-লুচি, গুড়-মুড়ি আর খই
অন্য ছড়া আতা গাছের তোতা পাখি কই ?
একটা ছড়া ছুটি-ছুটি, উড়িয়ে দিলেম ঘুড়ি
অন্য ছড়া ইঁদুর দৌড়, শৈশব হয় চুরি!!