২০০৭ সালে যোধপুরের সাহারানপুরের রাম সিংয়ের বয়স যখন সবেমাত্র পাঁচ বছর, তখন তাদের বাড়ির পুরোনো ফ্রিজটি খারাপ হয়ে যায়।
মেকানিক দেখে বলেছিলেন, এটা সারিয়ে আর কোনও লাভ নেই। সেটা শুনে তার মা খুব ভেঙে পড়েছিলেন। তখনই সে মনে মনে ঠিক করেছিল, মাকে একটি নতুন ফ্রিজ কিনে দেবে। ফলে তখন থেকেই সে কয়েন জমাতে শুরু করে।
বারো বছর পরে সেই ছেলেটি যখন ১৭ বছরের যুবক, তখন ১২ বছর ধরে তিল তিল করে জমানো এক, দুই, পাঁচ ও দশ টাকার কয়েন দিয়ে অবশেষে চলতি বছরে মায়ের জন্মদিনে ফ্রিজ কিনে দিল কলেজ পড়ুয়া এই ছেলে।
সে দিন সংবাদপত্রে সে বিজ্ঞাপন দেখেছিল, ফ্রিজ কেনার ওপরে বেশ বড় রকমের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সেটা দেখে আর সময় নষ্ট করেনি সে। সোজা ফোন করেছিল শোরুম মালিককে। জানিয়েছিল ফ্রিজ কেনার কথা।
কিন্তু দোকানে দোকানে ঘুরে অতগুলো কয়েনকে কাগজের নোট করার মতো সময় ছিল না তার হাতে। তাই সে বলেছিল, ফ্রিজটির দাম সে কয়েনেই মেটাতে চায়।
তখন শোরুমের মালিক ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে, ফ্রিজের পুরো দামটাই কেউ খুচরো পয়সায় দিতে পারে। তাই সম্মতি জানিয়েছিলেন।
শোরুমের মালিক রাজি হতেই, কয়েনগুলো একটা বস্তায় ভরে শিবশক্তি নগরের সেই শোরুমে গিয়ে হাজির হয় সে। বস্তায় তখন ১৩ হাজার পাঁচশো টাকা। যার ওজন প্রায় ৩৫ কিলোর ওপর।
অগত্যা যে ফ্রিজটা তার পছন্দ হল, তার দাম শুনে সে পিছিয়ে এল। কারণ, সেটা কিনতে হলে আরও দুই হাজার টাকা দরকার। কিন্তু তার কাছে তো আর কোনও টাকা নেই! তা হলে উপায়!
তখন এগিয়ে এলেন শোরুমের মালিক নিজেই। রাম সিংয়ের সব কথা শুনে তিনি অভিভূত হয়ে পড়লেন। ঘোষিত ছাড়ের উপরে অতিরিক্ত আরও দুই হাজার টাকা ছাড় দিয়ে ওই তেরো হাজার পাঁচশো টাকাতেই ফ্রিজটি তুলে দিলেন তার হাতে।
মায়ের প্রতি এমন ভালবাসা দেখে শোরুম মালিক হরিকৃষ্ণাণ খাতরি সব কয়েন নিয়ে নেন। এ দিন কয়েনগুলো গুনতে তাঁর সময় লেগেছিল প্রায় চার ঘণ্টা।
মাকে ফ্রিজ কিনে দিতে ১২ বছরে ৩৫ কেজি কয়েন জমিয়েছে ছেলে
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়।
আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন