তিস্তা বাঁধের গজলডোবা অংশের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দিয়েছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বছরের এই সময়ে হঠাৎ করে এমন পানি বৃদ্ধি বা বন্যার আশংকা অস্বাভাবিক ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউ-দৌলা বলেছেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বুধবার দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজে যে ফ্লাড বাইপাস আছে, নদীতে পানির প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমা ছাড়ালে ওই বাইপাস খুলে যায়, সেটা ইতিমধ্যে খুলে গেছে।’
এই কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার পর থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে। বুধবার সকাল ৬টার সময় প্রথম বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে। ভারতীয় অংশে গত কয়েক দিন প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে যাওয়ায়, তারা তিস্তা ব্যারেজের গজলডোবার ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে। যে কারণে আমাদের এখানে হঠাৎ পানির বৃদ্ধি ঘটেছে।
তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এদিকে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বিবিসিকে বলেছেন, বছরের এই সময়ে হঠাৎ করে এমন পানি বৃদ্ধি বা বন্যার আশংকা অস্বাভাবিক ঘটনা।
ডিসি জানিয়েছেন, লালমনিরহাটের তিনটি উপজেলার অনেকগুলো গ্রাম, বিশেষ করে তিস্তার চর এলাকাগুলো ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।
সাধারণত তিস্তার পানির প্রবাহ ৫২.৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত স্বাভাবিক বিবেচনা করা হয়। পানির প্রবাহ ওই সীমার ওপরে গেলে তাকে বিপৎসীমা বিবেচনা করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, মঙ্গলবার রাতে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
তিস্তার পানিতে ভারতের জলপাইগুড়ির সারদাপল্লি, সুকান্তনগর, মৌয়ামারি, চাঁপাডাঙা, নন্দনপুর, বোয়ালমারি, পাতকাটা প্রভৃতি এলাকা প্লাবিত। এই সব এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ময়নাগুড়ির দোমহনি ১-এর বাসুসুবা গ্রাম প্লাবিত। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।