কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শনাক্ত হয়েছে। ওই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাকে শিগগির গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব সদরদপ্তরে ‘তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ও সার্বিক ব্যবহার র্যাব ফোর্সেসের সকল ব্যাটালিয়ন ও ক্যাম্প পর্যায়ে বিস্তৃত করার লক্ষে র্যাবের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন’ শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত বুধবার কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় জেলার কয়েকটি পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষে চারজন মারা যান। এ সময় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া শুক্রবার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় একজন নিহত হন। গত রবিবার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত কোনো পূজামণ্ডপে এ ধরনের কিছু ঘটেনি। কিন্তু এবার দেখছি অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। আসলে ঘটানো হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু উগ্র মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। সেখানে পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খেতে হয়েছে। সেখানে চারজন মারা গেছে। আজ আরেকজন মেডিকেলে মারা গেছে।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘কেনই এই হত্যাকাণ্ড, কেন এই মৃত্যু। কার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য এই মৃত্যু। আমরা দেখলাম পরিতোষ নামে এক অল্প বয়সী ছেলে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেটা কেন্দ্র করে সহিংসতা। আমাদের পুলিশ বাহিনী তার বাড়ি ঘর রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে তার পাশের গ্রামে অগ্নিসংযোগ লুটপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। এটার আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। ফেসবুকে মিথ্যে প্রচারের মাধ্যমে রামু, নাসিরনগর ভোলাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছেন স্বার্থান্বেষি একটি মহল অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক প্রচারণা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তারা সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করে যাচ্ছে। গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে একটি নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে। দুই যুবক একজনকে চাপাতি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করছে। সেই হৃদয় বিদারক ঘটনা দেখে সবার হৃদয় কেঁপে উঠেছে। সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজকে ক্লিপ আকারে প্রচার করে একটি মহল নোয়াখালীর যতন সাহাকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে মর্মে অপপ্রচার করছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, ন্যাক্কারজনক ও অমানবিকও বটে।’