ভারতের কয়েকটি রাজ্যে টানা বৃষ্টি-বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালা সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া উত্তরাখন্ড, রাজস্থান, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। খবর এনডিটিভির
খবরে বলা হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত আরব সাগরে নিম্নচাপের কারণে ভারী বৃষ্টিতে কেরালায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৫ জনের। এছাড়া উত্তরাখন্ডে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। বেশিরভাগ মানুষ ভূমিধস ও বন্যার কারণে মারা গিয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে দু’টি বড় নদীবাঁধের লকগেট খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এর ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
যে দু’টি বাঁধের জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে একটি এশিয়ার বৃহত্তম খিলেন বাঁধ ইদ্দুকি। যা রয়েছে পেরিয়ার নদীর উপর। অন্যটি ইদামালায়ার বাঁধ। এই বাঁধটিও পেরিয়ারেরই একটি উপনদীর উপর রয়েছে।
সোমবার কেরালার জলমন্ত্রী রসি অগাস্টিন জানিয়েছিলেন, ইদ্দুকি বাঁধের জলস্তর যেকোনো মুহূর্তে বিপদসীমা পেরিয়ে যাবে। বাঁধের জলস্তর সোমবার সকাল ৭টায় ছিল বিপদসীমার মাত্র দু’ফুট নীচে। মঙ্গলবার সেই সীমা পেরিয়ে যায়।
রসি বলেন, ‘বাড়তে থাকা জলস্তর বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই ইদ্দুকির দু’টি গেট ৫০ সেন্টিমিটার করে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ কিউবিক মিটার করে জল বেরিয়ে যাবে।’
এর্নাকুলামের জেলাশাসক জাফর মালিক জানিয়েছেন, ইদামালায়ার বাঁধটিরও দু’টি শাটার ৮০ সেন্টিমিটার করে খুলে দেওয়া হবে।
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যে। বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের মতে, রাজ্যের অধিকাংশ জেলা যেখানে প্লাবিত সেখানে বাঁধের জল ছাড়লে বিপদ আরও বাড়তে পারে। যদিও পিনারাই বিজয়ন সরকার জানিয়েছে মানুষের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। প্রশাসনের সতর্কবার্তা মেনে চললে সাধারণ মানুষও ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলতে পারবেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
শুধু কেরল নয়, সোমবার উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, দিল্লিসহ দেশের আরও ১০টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় পাঁচ জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন দু’জন। হিমাচল প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশও ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত।