অনলাইনে বিজনেস প্লাটফর্ম ইভ্যালি পরিচালনা করতে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
কমিটির অপর সদস্যরা হচ্ছেন, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, সাবেক সচিব মাহবুবুল কবির, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন শামীম আজিজ খান।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও সেটি করা হলো আজ।
১৩ অক্টোবর সকালে ইভ্যালি পরিচালনায় অন্তর্বতীকালীন বোর্ডের জন্য তিন সচিবের নাম প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা হলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী।
এদের তিনজনের মধ্যে থেকে একজন বাছাই করে ইভ্যালির অবসায়নের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট পরিচালক কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত ১২ অক্টোবর ইভ্যালির পরিচালনায় বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত দেয় হাইকোর্ট। এই বোর্ডে একজন সাবেক বিচারপতি, সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট ও আইনজীবী থাকবেন।
মঙ্গলবার ইভ্যালির বিষয়ে হাইকোর্টে দাখিল করা জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজের যাবতীয় নথি নিয়ে শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। ১১ অক্টোবরের মধ্যে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রারকে আদালতে সব নথি দাখিল করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ে নথি দাখিল করলে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চান আদালত। এজন্য একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিবাদীদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। ইভ্যালির একজন গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আদালত।
পণ্য কেনার পাঁচ মাস পরেও সেটি হাতে না পাওয়ায় এক গ্রাহক ইভ্যালি অবসায়ন চেয়ে একটি আবেদন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন ও ইভ্যালিসহ ১১ জনকে বিবাদী করা হয় সেই আবেদনে।
ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাট থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে র্যাব। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।