জার্মানির বিলিফেল্ডের মার্ক উববেনহর্স্টকে প্রতিদিন ১০০ গ্লাস করে জল পান করতে হয়। তা না হলেই তিনি মারা যাবেন।
৩৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তি একটি বিরল রোগে আক্রান্ত। এ রোগের জন্যই একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে তাঁর অনেক বেশি পরিমাণে তেষ্টা পায়। এত বেশি তেষ্টা পায় যে, তিনি একদিনে ১০০ গ্লাস, মানে প্রায় ২০ লিটার জল পান করেন।
তিনি একটানা এক ঘণ্টার বেশি ঘুমোতেও পারেন না। কারণ এক ঘণ্টা পর পর তাঁকে টয়লেটে যেতে হয়। তিনি ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস নামের একটি বিরল রোগে ভুগছেন। অতিরিক্ত প্রস্রাবের কারণে সব সময়ই তিনি তৃষ্ণার্ত থাকেন। জল পান করার একটু পরেই তাঁকে টয়লেটে যেতে হয়। কারণ তাঁর শরীর জল ধরে রাখতে পারে না। তাই ঘন ঘন জল খেতে হয় তাঁকে। জল না হলে তিনি বাঁচবেন না।
মার্কের বাবা-মা খুব ছোটবেলাতেই বুঝে গিয়েছিলেন যে, আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের চেয়ে তাঁদের ছেলের বেশি পিপাসা পায়। জল ছাড়া মার্ক এক ঘণ্টাও থাকতে পারে না।
ফলে তখনই তাঁকে বিভিন্ন বড় বড় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করেও এ রোগের কোনও সুরাহা করতে পারেননি। তবে তাঁরা মার্ককে কিছু ওষুধ দিয়েছেন। সে সব ওষুধ খেয়েই মোটামুটি সুস্থ থাকেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দিনে অন্তত ২০ ক্লাস জল না খেলে তিনি মারা যেতে পারেন।
মার্ককে নিয়ে চিকিৎসকেরাও ভীষণ চিন্তিত ছিলেন। এই রোগ নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালাচ্ছিলেন। কারণ এটা সত্যিই একটা বিরল রোগ। মার্ক যত বড় হচ্ছিলেন, তাঁর জল খাওয়ার প্রবণতাও তত বাড়ছিল।
এই কারণে তাঁর ঘরে জলের বোতলের একটি স্টোরেজ রয়েছে। তিনি যাই করুন না কেন, তাঁর সামনে সব সময় জল থাকা চাই। তা না হলে তিনি ডিহাইড্রেশনের কারণে মারা যেতে পারেন।
মার্ক যদি খানিক পর পর জল না খান, তা হলে তাঁর মাথা ঘোরা শুরু হয়ে যায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এর ফলে তাঁর মৃত্যুও হতে পারে।
তিনি যেমন সবার থেকে বেশি জল খান, ঠিক তেমনই তিনি যদি মাত্রাতিরিক্ত জল পান করে ফেলেন, তা হলে সেটাও তাঁর পক্ষে মৃত্যুর একটা কারণ হতে পারে। আসলে অতিরিক্ত জল খাওয়ার ফলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়। আর এর ফলে যে মৃত্যু হতে পারে, তা প্রমাণিত।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০০৭ সালে, গেমিং কনসোল জয়ের প্রতিযোগিতায় তিন সন্তানের জননী এক ঘণ্টায় ছ’লিটার জল খাওয়ার ফলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।
এই রোগের এখনও পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা বেরোয়নি। যদিও তিনি এখন অনেকটাই ভাল আছেন এবং এ ভাবে বেঁচে থাকাটাই রপ্ত করে ফেলেছেন জার্মানির মার্ক উববেনহর্স্ট।
প্রতিদিন ১০০ গ্লাস জল না খেলেই মারা যাবেন তিনি
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়।
আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন