কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে জুমার নামাজের পর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল বের করে মুসল্লিদের একটি অংশ। মিছিলটি কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড়ে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় মুসল্লিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজের আগেই দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশের একটি কেঁচি গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। ওই সময় একজন নিরাপত্তারক্ষী গেটটি বন্ধ করে দেন। এতে নামাজ পড়তে আসা একদল মুসল্লি উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
নামাজ শেষে ওই গেটের তালা ভেঙে বেরিয়ে আসে একদল মুসল্লি। শুরুর দিকে অল্প কিছু মুসল্লিকে দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এরপর মুসল্লিরা রাস্তায় নেমে আসেন এবং একটি মিছিল বের করেন।
মিছিলটি কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে এলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় মুসল্লি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়েন এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে মুসল্লিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
মহানগর পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার বায়েজিদুর রহমান বলেন, ‘উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের একটি দল বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে পল্টন হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে আসে। এ সময় তাদের পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। পুলিশি বাধা অতিক্রম করতে তারা ইট-পাটকেল ও লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। আক্রমণ প্রতিহত করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।’
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ সময় নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে তিনজন এবং পল্টন মোড় থেকে এক মুসল্লিকে আটক করে পুলিশ।
সংঘর্ষের কারণে গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় আধা ঘণ্টার মতো গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে।