অঘোষিত ‘সেমিফাইনালে’ প্রবল চাপ নিয়ে ম্যাচ জিতলো কলকাতা নাইট রাইডার্স। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ছক্কা মেরে কলকাতার ৩ উইকেটের জয়ের সঙ্গে ফাইনাল নিশ্চিত করেন রাহুল ত্রিপাঠি।
বুধবার আইপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে কলকাতার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দিল্লি ক্যাপিটালস ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে। জবাবে সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো কলকাতা। ২৫ বলে প্রয়োজন ছিল ১৩ রানের, তখনও হাতে ৯ উইকেট। কিন্তু সহজ এই ম্যাচটি কলকাতা জিতলো ১ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে! হারের পথে থাকা কলকাতার ফাইনাল নিশ্চিতের নায়ক ত্রিপাঠি। তার দারুণ এক শটে ছক্কা হতেই ফাইনালে নাম লিখে ফেলে সাকিবরা।
শেষ ৪ ওভারে কলকাতার ব্যাটারদের চেপে ধরেন দিল্লির বোলাররা। ১৬তম ওভারের শেষ বলে নিতিশ রানাকে (১৩) শিমরন হেটমায়ারের তালুবন্দি করেন আনরিখ নর্কিয়া। ঠিক তখনই ভেঙে পড়ে কলকাতার ব্যাটিং লাইনআপ। ২৫ বলে ১৩ রানের সহজ লক্ষ্যটাকে কঠিন বানিয়ে ফেলেন শুভমান গিল, দিনেশ কার্তিক, ইয়োন মরগান, সাকিব ও সুনিল নারাইন দ্রুত ফিরে গেলে। শুভমান ছাড়া বাকি চার ব্যাটারের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি!
দলের মিডল অর্ডার যখন ব্যর্থ, তখন ত্রাতার ভূমিকাতে ত্রিপাঠি। চার নম্বরে নেমে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখা ত্রিপাঠিই মূলত জয়ের নায়ক। শেষ ওভারে জয়ের জন্য যখন ৭ রান প্রয়োজন, তখন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পরপর ২ বলে ফিরে যান সাকিব ও নারাইন। প্রথম ৪ বলে মাত্র ১ রান আসায় শেষ ২ বলে জিততে প্রয়োজন পড়ে ৬ রান। অশ্বিনের হ্যাটট্রিকের সুযোগ আসা পঞ্চম বলে ত্রিপাঠি ঠাণ্ডা মাথায় বিশাল এক ছক্কায় কলকাতাকে ফাইনালে তুলে নেন। দম বন্ধ করা ম্যাচে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সাকিবরা।
অথচ জয়ের সহজ পথ শুরুতেই তৈরি করে ফেলেছিলেন শুভমান ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার। দুজন মিলে ওপেনিং জুটিতে ৯৬ রান তুলে ফেলেন। শুভমান ৪৬ রানে আউট হলেও ভেঙ্কটেশ ৪১ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন।
আগের ম্যচের মতো এই ম্যাচেও নায়ক হতে পারতেন সাকিব। কিন্তু ২ বল খেলা বাঁহাতি ব্যাটার ব্যাটে-বলে সংযোগই করতে পারেননি। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হয়েছেন তিনি। শারজাতে আগের ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ৯ রান করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে বিদায় করে ফাইনালে যাওয়ার পথটা তৈরি করেছিলেন তিনি। কোয়ালিফায়ারেও বোলিংয়ে ভালো করেছেন, তবে ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ সাকিব।
দিল্লির বোলারদের মধ্যে অশ্বিন, নর্কিয়া ও কাগিসো রাবাদা প্রত্যেকে নেন ২টি করে উইকেট। আর আবেশ খান নিয়েছেন একটি উইকেট।
এর আগে টস জিতে কলকাতা অধিনায়ক মরগান ব্যাটিংয়ে পাঠান দিল্লিকে। সাকিবদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দিল্লির ইনিংস বেশিদূর এগোয়নি। ৫ উইকেটে ১৩৫ রান করে তারা। সবচেয়ে সফল ব্যাটার শিখর ধাওয়ান। ৩৯ বলে বাঁহাতি ওপেনার করেন ৩৬ রান। এছাড়া শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রানের ইনিংস।