এবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজীরদীঘিরপাড় আলিম মাদরাসার এক শিক্ষক ছয় ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছেন। সহকারী শিক্ষক স্থানীয় জামায়াত নেতা মঞ্জুরুল কবির মঞ্জু ওই দাখিল শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেন। গত বুধবার ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল শুক্রবার বিকেলে কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে গতকালই আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বুধবার শ্রেণিকক্ষে পাঠ কার্যক্রমে অংশ নেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ছয়জনকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দা আসতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে একটি কাঁচি এনে একে একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশে এলোমেলোভাবে চুল কেটে দেন। এরপর ছাত্রদের কাঁদতে দেখা যায় ভিডিওতে। পরে তারা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেরিয়ে যায়। বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, ছাত্রদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এটি করা হয়েছে।
স্থানীয় বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সব সময় দলীয় প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁর ভয়ে অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায়। মঞ্জু সরকারবিরোধী আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াও মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের সুপার মাওলানা বালাকাত উল্যা বলেন, ‘আমি অসুস্থ রয়েছি। চুল কাটার ঘটনাটি শুনেছি। কোনো ছাত্র লিখিত অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। কেউ অভিযোগ করেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ‘ঘটনাটি আমি অবগত নই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হবে।’