অতিমারী করোনা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বন্ধ হতে বসেছিল ক্যানিংয়ের শরৎপল্লি গ্রামের একমাত্র দুর্গোৎসব।পরবর্তী সময়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয় রজত জয়ন্তী বর্ষের দুর্গোৎসব। শরৎপল্লি গ্রামবাসী ও শরৎ স্পোর্টিৎ ক্লাবের উদ্যোগে সহজ পাঠ নিয়েই মা দুর্গা চিন্ময়ী রুপে স্বপরিবারে আগমন করবেন বাঁশের খুঁটি দিয়ে তৈরী খড়ের চালাঘরে।রজত জয়ন্তী বর্ষের এই পুজোর থীম কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের সহজপাঠ বইয়ের অনুকরণ। প্যান্ডেলের মাটির দেওয়ালের প্রতিটি কোনায় ফুটে উঠবে ছোট বেলার হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্য প্রথম পাঠ ‘ছোট খোকা বলে অ আ।’
ক্লাবের সম্পাদক পঙ্কজ মন্ডল বলেন, ‘অতিমারী করোনা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাজেট খুবই ছোট। কিন্তু আয়োজন বিশাল। সরকারী বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে এই পুজো অনুষ্ঠিত হবে।বর্তমানে আর ছোট খোকা অ আ বলে না। এখন এ বি সি ডি বলে। অতীতের সেই আবেগ আর ভাবধারা প্রায় বিলুপ্তির পথে। সেই আবেগকে পুনুরুজ্জীবিত করতে আমরা কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের সহজপাঠকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও আমরা প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। মাটির ঘরেই জন্ম। আমাদের বাজেট ও স্বল্প। আর সেই কারণে বিখ্যাত শ্যামা সঙ্গীত শিল্পী পান্নালাল ভট্টাচার্য্যের বিখ্যাত গান ‘চাই না মাগো রাজা হতে, রাজা হওয়ার সাধ নাই মা গো দুবেলা যেন পাই মা খেতে, আমার মাটির ঘরে বাঁশের খুঁটি মা, পাই যেন তায় খড় যোগাতে- মা,আমার মাটির ঘর যে সোনার ঘর মা- অনুকরণে আমাদের প্যান্ডেল খড়ের ছাউনি দিয়ে তৈরী মাটির চালা ঘরে শিশির বিন্দু মাড়িয়ে দোদুল্যমান কাশফুলের মতো মা দুর্গার আবির্ভাব ঘটবে।’
পুজো উদ্যোক্তা কমিটির অন্যতম সদস্য মিঠুন দেবনাথ, পল্লব মজুমদার, সুব্রত দাস ও সঞ্জয় দাস জানান, ‘প্রতি বছরই পুজো কটাদিন বিভিন্ন ধরনের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকতো। করোনা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সেই সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠী থেকে মহা অষ্টমী পর্যন্ত প্রতিদিনই মায়ের মহাপ্রসাদ বিতরণ, দরিদ্র নরনারায়ণ সেবা এবং বস্ত্র বিতরণের কর্মসুচি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দশমীতে শাস্ত্রমতে দেবী কে দর্পণে বিসর্জন করা হবে।”