ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খিরিতে ৪ কৃষকসহ ৮ জনকে ‘হত্যার প্রতিবাদে লখিমপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ অন্যান্য নেতারা। তবে খিরিতে যাওয়ার আগেই কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট।
জিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাব পুলিশ গৃহবন্দী করে রেখেছিল উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদককে। সেই আদেশ অমান্য করে রোববার রাতে লখনউ থেকে লখিমপুর খিরির উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রিয়াঙ্কা।
কংগ্রেসের দাবি, তারপরেই হরগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে। পুলিশ প্রিয়াঙ্কার গাড়ি আটকানোর পর পায়ে হেঁটেই লখিমপুরের দিকে রওনা হন প্রিয়াঙ্কা। দফায় দফায় লখিমপুর যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয় তাকে। আটকে দেওয়া হয় কনভয়। অন্যদিকে, পুলিশের দাবি লখনউ থেকে আটক করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে।
প্রিয়াঙ্কাকে সীতাপুর জেলার একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউপি কংগ্রেস টুইট করে এই ঘটনার কথা জানিয়েছে।
লখিমপুর খিরি যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রবিবারের ঘটনার কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘এই দেশে কৃষকদের যেভাবে পদদলিত করা হচ্ছে, তাতে আমার কোনও নিন্দার ভাষা নেই। কয়েক মাস ধরে, কৃষকরা তাদের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছে, কিন্তু সরকার শুনতে প্রস্তুত নয়। আজকের ঘটনা দেখাল যে এই সরকার কৃষকদের পিষে ফেলার রাজনীতি করছে। তবে এই দেশ কৃষকদের দেশ।’
তাকে গৃহবন্দী করে রাখার ইউপি পুলিশের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনও অপরাধ করছি না। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাই এবং তাদের দুঃখ ভাগ করতে চাই। আমি কি ভুল করছি? যদি কিছু ভুল করে থাকি, তাহলে আপনার (ইউপি পুলিশ) গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা উচিত। ইউপি পুলিশ আমাকে আটকে দিয়েছে, কিন্তু কোন কারণে? ‘
কংগ্রেস সূত্রের খবর, লখিমপুর খেরি যেতে পারেন রাহুল গান্ধীও। সোমবার লখিমপুর যাওয়ার কথা রয়েছে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব, আরএলডির সর্বভারতীয় সভাপতি জয়ন্ত চৌধুরীর।
এমন অবস্থার পেক্ষিতে লখিমপুর খেরিতে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। গোটা এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে সরকার।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যর সফরের প্রতিবাদে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এলাকার কৃষকরা। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়ি ২ কৃষককে পিষে দেয়। সেই গাড়িতে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে। ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। লখিমপুর খিরির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরুণ কুমার সিং জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষে ৪ কৃষকসহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।