পর্যটনের অপার সম্ভাবনার জেলা নাটোরে দাঁয়সাড়া আয়োজনে পালিত হয়েছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ আনুষ্ঠানিকতায় আমন্ত্রিত হননি পর্যটন সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশেরও কোন আয়োজন ছিলনা দিবসটিতে। এমন আয়োজনে হতাশ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন সংশিষ্টরা।
আজ সোমবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী ও রোভার স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে আলোচনা সভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল আয়োজন। এতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারোয়ারসহ অন্যান্যরা।
বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন’। তবে এই অনুষ্ঠানে পর্যটন সংশ্লিষ্ট কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পর্যটন স্পটগুলোতেও দর্শক বাড়াতে কোন আনুষ্ঠানিকতা নেই এবার। এমনকি ওইসব স্পটের দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তিও আমন্ত্রিত হয়নি অনুষ্ঠানে। পর্যটনের সম্ভাবনা থাকার পরও এই জেলায় এমন আয়োজনে হতাশা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন সচেতন ব্যক্তি ও পর্যটন নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা।
এ ব্যাপারে উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যটন স্পট নাটোরের লালপুরের গ্রীণভ্যালি পার্কের গণসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব রায়হান বলেন, এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা তারা পাননি। তাই গতানুগতিক ভাবেই চলছে তাদের কার্যক্রম। এছাড়া সরকারী কোন আয়োজনে তারা আমন্ত্রণ বা চিঠিপত্র পাননি বলে তিনি জানান।
এদিকে ঢাকার বাইরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যটনের অনন্য কেন্দ্র উত্তরা গণভবন, নাটোর রাজবাড়িসহ পর্যটন স্পটগুলোতেও কোন আয়োজন নেই দিবসটি ঘিরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুৃক দুজন দায়িত্বরত ব্যক্তিরা জানান, তাদের এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা বা অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণও ছিলনা।
তবে তারা শুনেছেন করোনার কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া নাটোরে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িতরাও কোন ধরনের আমন্ত্রণ পাননি অনুষ্ঠানে। এ ব্যাপারে বনলতা ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, করোনা অতিমারিতে ট্যুরিস্ট ব্যাবসা ধ্বংশের দিকে।
তবে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় ট্যুরিজম আবার ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে তেমন সময়ে এমন আয়োজনে তাদের সম্পৃক্ত করা উচিত। এছাড়া এই সংশিষ্ট পার্ক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সম্পৃক্ত করার প্রয়োজন ছিল।
এছাড়া পর্যটকদের সহযোগিতা ও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজত ট্যুরিস্ট পুলিশেরও কোন আয়োজন চোখে পড়েনি দিবসটিতে। বিষয়টি জানতে তাদের নাটোর জোনের সরকারী মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে এ ব্যাপারে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারোয়ার বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও বরাদ্দ না থাকায় ছোট পরিসরে দিবসটি পালন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য নাটোরের পর্যটনস্পটগুলো দেশ বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করলেও আবাসন সংকটসহ অব্যবস্থাপনার কারণে এখনো তা সমৃদ্ধ হচ্ছে না। দর্শক ও পর্যটকদের মাঝে সাড়া জাগানো স্পটগুলো হলো, নাটোরের উত্তরা গণভবন, নাটোর রাজবাড়ি, চলনবিল, হালতিবিল, চলনবিল যাদুঘর, পদ্মবিল, গ্রীণভ্যালি পার্ক, চলনবিল পার্ক ও তিসিখালী মাজার অন্যতম।
এছাড়া চৌগ্রাম রাজবাড়ি, খাজুরা জমিদার বাড়ি, বাগাতিপাড়া ইউএনও পার্ক, শহীদ সাগর ও বিলের সাবমারসিবল রাস্তাকে ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগছে না উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনার অভাবে।