রিজেন্ট কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি !

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তির মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে ফের নাম এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের।

মামলায় আসামি না করা হলেও তদন্তে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত সাবেক এই মহাপরিচালককে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

আজাদ ছাড়াও কারাগারে থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তাসহ মোট ছয়জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। শিগগিরই আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেবে দুদক।

লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনার নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারের তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। তবে সেই মামলায় বাদ পড়েছিল স্বাস্থ্যের সাবেক মহাপরিচালক আজাদের নাম।

- বিজ্ঞাপন -

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর তদন্তের পর রিজেন্ট হাসপাতালে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় স্বাস্থের সাবেক ডিজির যোগসূত্র খোঁজে পেয়েছে দুদক। নতুন করে স্ব্যস্থ্যের চার কর্মকর্তা সঙ্গে তার নাম কমিশনে অনুমোদনের জন্য জমা দিলে কমিশন চার্জশিটের অনুমোদন দেয়।

করোনাভাইরাস মহামারিতে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে গোটা স্বাস্থ্যখাত নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এসব ঘটনায় তোপের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

মূলত কোভিড-১৯ সময়ে চিকিৎসকদের মানহীন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহের ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের এসব অনিয়ম প্রথম সামনে চলে আসে। একইসঙ্গে জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতি ও রিজেন্ট হাসপাতালের করোনার ভুয়া রিপোর্টকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনা দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে।

স্বাস্থ্যখাতের ‍দুর্নীতির বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠতা এবং কমিশনের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত বছর ৬ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালককে পৃথক ‍দুটি নোটিশ দিয়ে তলব করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবশ্য দুদকের তলবের আগেই ওই বছরে ২১ জুলাই মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন আবুল কালাম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী ওই মাহপরিচালককে (আবুল কালাম আজাদ) অনুসন্ধান কর্মকর্তা মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর পাঠানো ‘অতীব জরুরি’ তলবি নোটিশে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে (১২ আগস্ট ২০২০) হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হলে বর্ণিত অভিযোগসংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।

- বিজ্ঞাপন -

পৃথক আরেকটি নোটিশে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আবুল কালাম আজাদকে ১৩ আগস্ট হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলেন। নোটিশ বলা হয়, সাহেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁর (আবুল কালাম আজাদ) বক্তব্য গ্রহণ প্রয়োজন।

দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিম্নমানের স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সেসময় মহাপরিচালকের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. আমিনুল হাসানসহ চারজনকে তলব করে সংস্থাটি।

গত বছর কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে থাকলে রোগীদের চিকিৎসায় ওই বছর ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। সেই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

- বিজ্ঞাপন -

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে সরকারে কাছ বিল আদায় করার পরও রোগীর কাছ থেকে করোনা টেস্টে বাড়তি টাকা আদায়ের ও অনিয়মের অভিযোগে গত বছরের ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়। সেসময় পালিয়ে যান সাহেদ।

লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করোনা চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার চুক্তিটিতে পরবর্তীতে অনেকেই অবাক হয়েছেন।

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চুক্তির নানা দিক খতিয়ে দেখে দুদক। পরে গত বছর সংস্থাটি স্বাস্থ্যের সেই ডিজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওই সময় দুদকের পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মো. ফানাফিল্যা ঢাকাটাইমসক বলেছিলেন, রিজেন্ট এর সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

পৃথক আরও একটি নোটিশের মাধ্যমে পদত্যাগ করা ওই ডিজিকে (আজাদ) জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক তদন্ত ( গোয়েন্দা শাখা) মীর জয়নুল আবেদিন শিবলী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সঙ্গে জেকেজির মতো প্রতিষ্ঠানের চুক্তি, লাইসেন্সের মেয়াদহীন রিজেন্ট হাসাপাতালের সঙ্গে চুক্তি, স্বাস্থ্যের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যের সাবেক মহাপরিচালকের বিষয়ে তদন্ত শুরু করে সংস্থাটি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!