দাপটের সঙ্গে সিরিজ জিতলেও শেষটা জয়ে রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৬২ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ করতে পেরেছে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান। কিউইরা শেষ টি-টোয়েন্টি ২৭ রানে জিতে নেওয়ায় ৫ ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ৩-২ ব্যবধানে।
আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় ব্যাটিং সহায়ক পিচ ছিল এদিন। কিউইরা আগ্রাসী সূচনা পেলেও প্রত্যাশিত ভালো সূচনা পায়নি বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ধসে বরং চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। ৪৬ রানে পতন হয় ৪ উইকেটের। কঠিন চাপে পড়ে যাওয়ার পরেও বাংলাদেশকে আশার আলো দেখাচ্ছিলেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ঝড়ো জুটিতে ৪৩ বলে যোগ হয় ৬৩ রান। দলীয় ১০৯ রানে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই জুটি ভেঙেছেন কুগলেইন। এর পরেই জয়ের পথ থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।
যে তরুণদের নিয়ে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল, তাদের মাঝে আলো ছড়িয়েছেন শুধু আফিফ হোসেন। ২ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৩ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থেকেছেন তিনি। কিন্তু নুরুল হাসান, শামীম হোসেন ফিরেছেন ভূমিকা না রেখেই। শামীম তো শেষ ম্যাচে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অংশই ছিলেন। করতে পেরেছেন ২ রান, নুরুল হাসান ৪। অথচ তাসকিন শেষ দিকে নেমে ব্যাটসম্যান হওয়ার চেষ্টা করে ৯ রানে ফিরেছেন।
শুরুতে মোহাম্মদ নাঈম হাত খুলে খেলছেন ঠিকই, কিন্তু আরেক ওপেনার লিটন ১২ বলে ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। এজাজ প্যাটেলের স্পিনে দারুণ এক ক্যাচে ফিরে গেছেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ ম্যাচে সৌম্যকে সুযোগ দেওয়া হলেও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ম্যাকনকির ঘূর্ণিতে দারুণ এক ক্যাচে ফিরেছেন মাত্র ৪ রানে। তারপরও বাংলাদেশের স্বস্তির জায়গা ছিল নাঈমের আগ্রাসী ব্যাটিং। অষ্টম ওভারে এই আগ্রাসনই কাল হয়ে দাঁড়ায়। বেন সিয়ার্সের গতিময় এক বলে গ্লাভসবন্দি হয়ে নাঈম ফেরেন ২১ বলে ২৩ রান করে। এটি আবার সিয়ার্সের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট। আগের ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা মুশফিকও ফিরে যান নাঈমের পর পর। রবীন্দ্রকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি ক্যাচ-আউটে ফিরেছেন মাত্র ৩ রানে।
কিউইদের হয়ে ৪ ওভারে ২১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন এজাজ প্যাটেল। ৩ ওভারে দুটি নিয়েছেন স্কট কুগলেইনও। একটি করে নিয়েছেন জ্যাকব ডাফি, কোল ম্যাকনকি, বেন সিয়ার্স ও রাচিন রবীন্দ্র।
ব্যাটিং সহায়ক পিচ পেয়ে শেষটা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে কিউইরা। টস জিতে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে করে ১৬১ রান।
শুরুতে ফিন অ্যালেন ২৪ বলে ৪১ রানে ফিরে গেলে শ্লথ হয়ে পড়েছিল কিউইদের রানের চাকা। কিন্তু অধিনায়ক টম ল্যাথাম একপ্রান্ত আগলে শেষটা করেছেন আগ্রাসী ভঙ্গিমায়। তার অপরাজিত ৫০ রানেই সমৃদ্ধ হয়েছে কিউইদের স্কোরবোর্ড। ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। সিরিজজুড়ে দারুণ পারফর্ম করায় নাসুমের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজ সেরাও তিনি।
বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ছিলেন শরিফুল। ২ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৮ রান! তাসকিনও ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন একটি। নাসুম ৩ ওভারে ২৫ রানে একটি, আফিফও সমসংখ্যক ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট।