মনের জোরই সফলতার প্রথম পদক্ষেপ
সফল হতে চাইলেই তো আর সফল হওয়া যায় না। তবে সফল হতে গেলে যেটা সবার আগে প্রয়োজন মানসিকভাবে শক্ত হওয়া। পরিস্থিতি যে সব সময় আপনার অনুকূল হবে তা কিন্তু নয়। পরিস্থিতি আপনার প্রতিকূলেও যেতে পারে, এটা অবশ্যই মাথায় রাখা দরকার। সেই কথা মাথায় রেখেই যে কোনও নতুন কাজ করা উচিত। তবে মানসিক ভাবে শক্ত হওয়ার জন্য নিজের মনকেই সবার আগে স্থির করতে হবে। কিন্তু অনেকেই মনের জোড় না বাড়িয়ে নিজের ভাগ্যকেই দোষারোপ করতে থাকেন। তাই ভাগ্যকে দোষারোপ না করে নিজের মনের জোড় বাড়াতে চেষ্টা করুন। এবার আলোচনায় আসা যাক কীভাবে নিজের মনের জোর বাড়িয়ে সফলতাকে আপনার সঙ্গী করবেন।
- নিজেকে নিজের কাছে কখনোই করুণার পাত্রী করবেন না। নিজেকে কখনো দুঃখী ভাববেন না। নিজেকে আহারে ভাবার কোনো কারণ নেই, এর ফলে নিজের কাছে নিজেই ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়বেন।
- লক্ষ্যে স্থির থাকা উচিত। পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক একেবারে ভয় পাবেন না। নিজের লড়াইটা নিজেই লড়ুন। যদি কেউ আপনার সঙ্গে চলতে না চায় তাহলে একলাই চলুন। সাফল্য পাওয়ার পর কারোর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে না।
- জীবনে অনেক কিছু আসবে, আবার যাবেও। পরিবর্তন হবে অনেক কিছু। আপনার প্রতিদিনের জীবনে যদি কোনও পরিবর্তন ঘটে তাহলে ভয় পাবেন না। মনে করবেন সব পরিবর্তন আপনার কাছে এক একটা চ্যালেঞ্জ। তাই ভয় না পেয়ে পরিবর্তনকে আপন করে নিন।
- মন না চাইলে সেই কাজ না করাই ভাল। সব কাজই যে আমাদের ভাল লাগে তা তো নয়।
- ধরুন এমন কাজ যা আপনার ঠিক পছন্দ নয়। তাই আপনি ঠিক পারবেন না। এমনকি আপনার মনে কাজের প্রতি অতটা কনফিডেন্ট নেই। তখন সেই কাজ না করাই ভালো। যে কাজ আপনি মন থেকে ভালবাসেন সেই কাজ করুন। আসলে যেখানে ভালোবাসা নেই, সেখানে প্রাণও নেই।
- অন্যের কথায় গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজের অনেকটা সময় যেমন নষ্ট হয়, নিজের মনের এবং কাজেরও ক্ষতি হয়।
- কে কি বলল তাতে আপনার কি! কারোর কথায় গুরুত্ব দেওয়া ছেড়ে দিন। নিজের জীবন কীভাবে কাটাবেন, কী কাজ করে ভালো থাকবেন তা একান্ত আপনার সিদ্ধান্ত। আপনার জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব অন্য কারোর হাতে কখনওই দেবেন না।
- ভাগ্যকে একদম দোষ দেবেন না। জীবনে কি নেই, জীবনে কি হয়নি তা নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না। কি হতে পারে সেই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন। তাতে আপনার সময়ও বাঁচবে এবং নিজের মনোবলও বাড়বে।
- মানুষ মাত্রেই ভুল করে কিন্তু একই ভুল বার বার করার কোনও মানেই হয়না। বার বার একই ভুল করতে থাকলে আস্তে আস্তে নিজের মনোবল ভেঙে যাবে। তাই একই ভুল বারবার না করে ধীরে সুস্থে কাজ করুন।
- অন্যের ভালতে খুশি হবেন। অন্যের আনন্দে নিজেকেও মিশিয়ে দেবেন সেই আনন্দের সঙ্গে।
- অন্যের খুশিতে খুশি হওয়ার পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো রাখতে হবে। দেখবেন আপনার সাফল্যতে এবং খারাপ সময় অনেকের সঙ্গ পাবেন। তবে যদি অন্যের খুশিতে খুশি না হন তাহলে আপনি ভেঙে পড়বেন।
- প্রথমবার সফল হতে না পারলে ভেঙে পড়বেন না। যদি দ্বিতীয় বারও সফল হতে না পারেন, তাহলেও ভেঙে না পড়ে আবার চেষ্টা করুন। দেখুন চেষ্টা না করলে কেউই কখনও সফল হতে পারে না। তাই প্রথমবার বা দ্বিতীয়বার যদি কোনও ভাবে সফল হতে না পারেন তাহলে ভেঙে না পড়ে শক্ত হয়ে উঠে দাঁড়ান।
- একাকীত্বকে জয় করুন। একবার জয় করতে পারলে আর কোনো কিছুতেই আপনি আর ভয় পাবেন না। আপনার সঙ্গে কেউ না থাকলেও একাকীত্বকে ভয় পাবেন না। যদি খারাপ সময় কেউ আপনার পাশে দাঁড়াতে না চায় তাহলে ক্ষতি কি। একাই পরিস্থিতির মোকাবিলা করুন। দেখবেন এতে আপনার মন যেভাবে শক্ত হবে তা কখনওই আর ভেঙে যাবে না।
- মনটাকে একেবারে দিঘির মতো ধীর স্থির করে নিন। যদি পরিস্থিতি কখনো আপনার অনুকূলে না থাকে, তখন মনটাকে একদম শান্ত ধীর স্থির করে নিন, তারপর ঠান্ডা মাথায় ধীরে ধীরে কাজ করুন। তাড়াহুড়ো করে কাজ করলে কোনো কিছুই ঠিকঠাক হবে না। অনেক ভুল হয়ে যাবে। তাই পরিস্থিতি আপনার প্রতিকূল হলে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করুন।
- একটা কাজ সম্পন্ন করার পর নিজেকে নিয়ে বেশি উচ্ছ্বাস না দেখিয়ে বা নিজেকে অতো জাহির না করে আপনি আপনার লক্ষ্যে স্থির থাকুন। যাতে কেউ না আপনাকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে পারে। সফল হওয়ার পরেও নিজেকে জাহির করবেন না। কারণ নিজের কথা আপনি কেন বলবেন, লোকে বলবে। এতে আপনার নিজের কাছেও নিজের সম্মান থাকবে পক্ষেও খুব একটা ভালো হবে না।
(চলবে)