মঙ্গলবার ২৪শে আগস্ট ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর গাইনেরপাড় এবং বরিশাল-ভোলা সাহেবের হাট সংলগ্ন সোমরাজী এলাকায় দুটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ম্টো ২০ জন আহত হয়েছেন।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন বরিশালের গৌরনদীতে যাত্রীবাহী বিএমএফ ও বিআরটিসি বাস এবং একটি প্রাইভেট কারের মধ্যে ত্রি-মুখী সংঘর্ষে তিন চালকসহ ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বার্থী এলাকায় এ দুর্ঘটনার পর মহাসড়কের ওপর দুর্ঘটনা কবলিত ২টি বাস ও ১টি প্রাইভেট কার পড়ে থাকায় বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে ঘটনাস্থলের উভয় দিকে আড়াই শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে কয়েক হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হন।
এতে আহত ১৫ জনের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৫ জনকে বরিশাল শেবাচিম ও তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে বিআরটিসি বাসের চালক মোঃ মুকুল (৪০), বিএমএফ বাসের চালক মোঃ আসলাম (৪৫), যাত্রী ঝুমা (২৮), ডাঃ সঞ্জয় (৩৫), তামান্না (২৯), আঃ রহিম (৪৫), হুমায়ন কবির(৭৫), সুলতানা(৬০) রয়েছেন। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জাানান, বরিশালগামী বিএমএফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-০৬৭৫) মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গৌরনদীর বার্থী এলাকা অত্রিকম করছিলো। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে আসা বিআরটিসি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-১২৪৪) সঙ্গে ওই বিএমএফ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এ সময় বিআরটিসির বাসের পিছনে আসা একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-খ-১২-০৩৭০) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিআরটিসির বাসের পিছনে আঁছড়ে পড়ে।
দুর্ঘটনাস্থলে মহাসড়কের ওপর দুর্ঘটনাকবলিত ২টি বাস ও ১টি প্রাইভেট কার পড়ে থাকায় বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলের উভয় দিকে আড়াই শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে কয়েক হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। পরে বরিশাল হতে রেকার এনে গাড়ীগুলো সরিয়ে বেলা দুইটা নাগাদ যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
অন্যদিকে মঙ্গলবার ভোরে বরিশাল সদর উপজেলার ভোলা মহাসড়কে সাহেবের হাট সংলগ্ন সোমরাজী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায় যশোর ভোলা রুটের আবদুল্লাহ পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১৪-৭৯২০) একটি গাড়ি।
যশোর থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৭ টায় ছেড়ে আসা গাড়িটি আজ (২৪ আগস্ট) মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৪ টায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এসময় বাসটিতে ২৭ জন যাত্রী ছিলো।
এদের মধ্যে ৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে একজন গাড়িতে রাখা ব্যাটারী পায়ের উপর পড়ে মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছেন। আহত যাত্রীরা সবাই ভোলায় গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম (৫০) (বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন) এর সাথে কথা বলে জানা যায় রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছে। নিচু জায়গা থেকে উচুতে উঠতে গিয়ে গাড়ির স্টিয়ারিং লক হয়ে যায়। যার কারণে ড্রাইভার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার পুলিশের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকেল নাগদ বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বরিশাল থেকে রেকার এনে মহাসড়কের ওপর থেকে দুর্ঘটনাকবলিত যান তিনটি সরানো হলে বিকাল সোয়া তিনটার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। গুরুতর আহত ১০জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতলে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিআরটিসি বাসে চালক মোঃ মুকুল (৩৮)কে ঘোষণা করেন। অপর ৯ জনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত ২টি বাস ও ১টি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে।