স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে শেষ স্ল্যাব বসানো হয়েছে। ফলে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুতে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে সড়কপথ। সেতুর মোট দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের সবগুলোই বসানো শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করার ক্ষেত্রে বাকি থাকল শুধু পিচঢালাই।
সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে সেতুর শেষ স্লাব বসানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।
তিনি বলেন, সেতুর মোট দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে মাত্র তিনটি স্লাব বসানো বাকি ছিল। যার মধ্যে গতরাতে বসানো হয় দুটি স্লাব। আর আজ সকালে একটি।
এর আগে গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শেষ তিনটি রোডওয়ে স্লাব বসানোর কাজ বাকি আছে। সেতুর ১২ ও ১৩নং পিলারের স্প্যানে শেষ তিনটি রোডওয়ে স্লাব বসানো হচ্ছে। রাতের মধ্যে দুটি স্লাব বসানো হয়ে যাবে। সর্বশেষ একটি রোডওয়ে স্লাব সোমবার সকালে বসানো হবে। সকাল ৯টা থেকে ১০টির মধ্যে শেষ রোডওয়ে স্লাবটি বসানোর প্রস্তুতি রয়েছে। ফলে সকালেই রোডওয়ে স্লাব বসানোর কাজ শেষ হচ্ছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পিচঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে আগামী অক্টোবর মাসের শেষ দিকে। এ কাজে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) সেতু বিভাগকে জানিয়েছে, তারা আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই সব কাজ শেষ করবে।
সব মিলিয়ে আগামী মে মাসেই পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব। তবে সেতু বিভাগ জানিয়েছে, দিনক্ষণ ঠিক করা হবে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পর।
এর আগে চলতি বছরের ২০ জুন শেষ হয়েছিল দ্বিতল সেতুর রেলওয়ে স্লাব বসানোর কাজ।
সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত সেতু প্রকল্পের সার্বিক কাজ এগিয়েছে ৮৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ মূল সেতুর কাজের আর বাকি মাত্র ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়।