বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভূক্তভোগী সত্তোরোর্ধ বাবা ও বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়ার নয়ানী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আনসার আলী এ কামনা করেন।
লিখিত বক্তব্যে মোঃ আনসার আলী জানান, মেঝো ছেলে আবুল কাশেম নান্নু কয়েকবারে তার প্রায় ১০ লাখ টাকার গাছ ও বাঁশ বিক্রি করে। আর এ কাজে তিনি যতবার বাধা দিয়েছেন ততবারই মারধর করেছে। এ নিয়ে ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারি নিজেদের বাড়িতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠক হয়। তবে ওই শালিসের রায় মেঝো ছেলে নান্নু মেনে নেয়নি।
মোঃ আনসার আলী বলেন, এরপর ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি টাকা চেয়ে না পেয়ে নান্নু আমাকে বেদম মারধর করে এবং জোরপূর্বক একটি গরু বাছুরসহ নিয়ে যায়। তখন আমি বাদী হয়ে একই সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেন। জামিনে ছাড়া পেয়েই মেঝো ছেলে নান্নু আমাকে আদালত চত্ত্বরেই হুমিক দেয়। তখন আমি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
তিনি বলেন, আমার দায়ের করা মামলায় সাক্ষী দেয়ায় দেলোয়ার মুন্সী নামে একজনকে মারধরও করে সে। পরে ২০১৭ সালে ১ জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতেও আরো একটি মামলা দায়ের করি।
তিনি বলেণ, জাল দলিল দিয়ে নান্নু আমার কিছু জমি জোরপূর্বক চাষাবাদ করছে এবং জমিও দখল করতে চায়। যে জমিতে চাষাবাদে বাধা দিলে আমার বসতঘর থেকে নামিয়ে দেয় নান্নু। আর তখন থেকে আমার বড় ছেলে আলাউদ্দিন বাবুলের ঘরে থাকি। ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাল দলিলের জোড়ে নান্নু লোকজন নিয়ে আমার ২৮৪ শতাংশ জমির ধান ও ১টি রেন্ট্রি গাছ জোর পূর্বক কেটে নেয়।
তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে গত ৫ বছর আমার সাথে ঝামেলা করে আসছে আবুল কাশেম নান্নু। আমি জীবিত থাকা অবস্থায় আমার জমির জাল দলিল তৈরি করে আমার জমি আত্মসাৎ করার পায়তারা করে আসছে।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী দুলুফা বেগম ২০১৫ সালে মারা যাওয়ার পর আবুল কাশেম নান্ন দাবী করে তার মা তাকে দলিল মূলে প্রায় ৫ একর জমি দিয়ে গেছে। কিন্তু আমি আমার স্ত্রীকে কোন দলিল দেইনি। আর নান্নু যে জাল দলিল তৈরি করেছে তার বড় প্রমান হলো আমি দুলুফা বেগমকে ১৯৬৭ সালেল ১৪ মার্চ বিয়ে করি কিন্তু বিয়ের ৬ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯৬১ সালের ২০ এপ্রিল সেই স্ত্রীকে কিভাবে জমি দিলাম।
তিনি বলেণ, এছাড়া আরো প্রায় দেড় একরের মতো জমি আমার মা কুলছুম বিবি দলিল মূলে দিয়েছে বলে নান্নু দাবি করছে। কিন্তু তার কাগজও আজ অব্দি দেখাতে পারেনি। নান্নু জোরপূর্বক কিছু জমি চাষাবাদ করছে এবং আরো অন্য জমি দখল করতে চাচ্ছে।
বৃদ্ধ বলেণ, আমি যে কোন সময় মৃত্যুবরণ করতে পারি। আমি অনেক ঋণগ্রস্থ ছিলাম, যেই অর্থ আমার বড় ছেলে আলাউদ্দিন বাবুল পরিশোধ করার পাশাপাশি জরিপ কাজের খরচসহ বহু ব্যয় বহন করেছে। সেজন্য আমি তাকে আড়াই একর জমি দিয়েছি। আবার মেঝো ছেলে নান্নু লাখ লাখ টাকা দেনা হলে ১১৭ শতাংশ জমি বিক্রি করে তা মিটিয়েছে এবং বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা থেকেও মুক্ত করেছি।
তিনি বলেণ, সবশেষ চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি আমার ৩ একর জমির ধান কেটে নিয়ে যায় নান্নু ও তার লোকজন। ওইসময় বাধা দিলে নান্নু ও তার ছেলে এমরান ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে আমাকে আহত করে। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় আমার বড়ছেলে বাবুল বাদী হয়ে নান্নুসহ ৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করি। সেই মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় নান্নু আমার জমির মুগডাল লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক তুলে নেয়। বাধা দিলে আমাকে গালাগাল ও মারার ষড়যন্ত্র করছে। এ অবস্থায় বন্দর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানলেও তার কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না।