এক চোর চুরি ক’রে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় এক যুবকের কাছে।রাতে চোরকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলতে থাকে,চোর! চোর! বলে। চোর তাকে বারবার বলতে থাকে ছেড়ে দেবার জন্য। চোর হুঙ্কার দিয়ে বলে আমায় না ছাড়লে তারও পরিণতি ভাল হবে না। বারবার বলার পরেও ওই যুবক চোরকে জড়িয়ে ধরে সবাইকে ডাকতে থাকে। বেগতিক দেখে চোর ও তখন সব জিনিস ফেলে ওই যুবককে জড়িয়ে ধরে চোর, চোর বলে চিৎকার শুরু করে। মানে পরস্পর চোর। চোর চিৎকারে লোকজন বেরিয়ে এল। কেউ বুঝতেই পারছে না, আসল চোর কে!তারা বলে চলেছে সবাইকে, ও চুরি করে পালাচ্ছিল, আমি ধরেছি।
অগত্যা পুলিশের হাতে।তারপর কোর্টে। বিচারক কে তারা একই কথা বলে যাচ্ছে। ভয় দেখলেও ওই এক কথা।
বিচারক সাজা দিয়ে বললেন, এখান থেকে দু মাইল দূরে একটি মরা আছে। তোমরা খালি পায়ে প্রচন্ড রোদে গিয়ে ওই মরাকে নিয়ে কোর্টে আনবে। তারা তাই করতে বাধ্য হল। একজন বলল,হায়,ভগবান! এ তোমার কেমন বিচার! ভাল কাজ করেও সাজা পাচ্ছি। চোর তখন বলে, কেন? তোকে না হাজারবার বললাম, ছেড়ে দে, ছেড়ে দে, শুনলি না। এখন ভুগে মর! আমি তো চুরির জন্যে সাজা পেতামই। তুই পেলি আমার কথা না শোনার জন্য।
শেষে মরাকে কোর্টে নামিয়ে বলল দুজনেই, হুজুর! এবার তো আমরা যেতে পারি!
বিচারক বললেন, না, তোমাদের বিচার এখনই শুরু হবে। এই বলে তিনি মরার দিকে তাকিয়ে বললেন, গয়ারামকে চোর আর কে চোরকে আটকেছিল? মরা তখন লাফ দিয়ে উঠে আঙ্গুল দিয়ে দেখল হুজুর!
এটা চোর, আর এই ভদ্রলোক চোরকে আটকেছিল।
বিচারক তখন চোরকে আটকে ওই ভদ্রলোককে মুক্তি দিলেন। এটা সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনা। আর অবাক হবার মত যেটা তা হল, বিচারক ছিলেন প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র। তিনি তখন ম্যাজিসট্রট ছিলেন।