মেঘ পিওন
আষাঢ়ী পুঞ্জ মেঘ রাশি গগনে ভাসি,
চঞ্চলা বেশ, নাহি ক্লান্তি লেশ, পরতে!
চলিছো কোন সে পথে, আলোকের রথে?
দিয়া বিজলীর হাসি, ওহে অবিনাশী,
নৈঋত কোণের দিক, আঁখি অনিমিখ!
ছড়ায়ে ঝিলিক দ্যুতি, চলো নিরবধি;
মোর এই মিনতি, যাও উত্তরে যদি,
হেরিও পশ্চাৎ দিক, করি এই ভিখ।
মেঘে’রা শুধাই শোন, হই ক্ষীন মৌন,
যেও মোর প্রিয় দ্বারে, বলিও গো ঠারে,
বিরহী শোকে ঝর্ঝরে, হারিয়ে তাহারে,
বার্তা নিও যেনো,হই দুত সাজ কোন,
বলিও,সে ঘুম ঘোরে আসে বারে,বারে,
স্বপ্ন ডিঙা বহরে ডাকে’যে অভিসারে।
পদ্মার করাল গ্রাসে
ছিলো মোর বাসগৃহ পদ্মা বালু চরে
ভাঙনের তান্ডবে তলে গেল সে বাড়ি
সম্বল সে ভিটেখানি গেলো মোরে ছাড়ি
তাই ভেবে আজ মোর আঁখি বারি ঝরে।
ছাদখানি কোথা পাব করবো যে বাস?
নাহি আর কোন ভুমি বানাবো আলয়
যেই দিক পানে হেরি লাগে মনে ভয়
আজ মনে জোর নাহি করবো যে আশ।
হায়! বুঝি সব শেষ এই
বয়সের ভারে আজ নুয়ে মোর দেহ
দৃষ্টিতে ঝাপসা দেখি অকুল পাথার।
আছে কি,যে লেখা আর ভাবি মোর ভালে
কোথা মোরে গোর দিবে বলো মোরে কেহ?
কেউ আছে শুনবে যে এ দুখ ব্যাথার?
প্রতীক্ষার প্রহর
নীল শাড়ীটি ভাঁজ করা যে
রইলো পড়ে তাকে,
ফুলগুলি আজ নুয়ে আছে
অভিমানে শাঁখে।
মনের মানুষ আসবে কবে
ভাবছি দিবাযামী,
সাজবো তখন মনের মতো
তারই হয়ে আমি।
আকুল হৃদয় তারই তরে
মন সঁপেছি যাকে,
দেখবে সেইতো আঁখি মেলে
চমকে দেবো তাকে।
অনুরাগে ছুঁয়ে দেবো
মন রাঙাবো রঙে,
নতুন সাজে দেখে সেইতো
মজবে নতুন ঢঙে।
বুকের মাঝে জড়াই তাকে
রাখবো সকাল সাঁঝে,
ভুলতে কি আর দেবো আমি?
জ্বলবে স্মৃতির মাঝে।
আষাঢ়ে রাত
তিমির নিথর রাত একলা গুমরে মন
স্মরণে নানা সুখের স্মৃতি,
বিরহী গাহিছে ব্যাথা গীতি
বাইরে আষাঢ়ের বর্ষণ বহে সারাক্ষণ।
কৃষ্ণ যামিনীর কোলে
ফুটন্ত মাধবী দোলে,
পবন বহে শনশন পুষ্প ছড়ায় ঘ্রাণ।
বিরহে ডাহুকী ডাকে
ঝোঁপে কলমি শাঁখে,
তার এ রোদন,সাথী হারা হৃদের ক্রন্দন।
ব্যাঙের আদুরে ডাক
ব্যাঙিনী দেয় যে হাঁক;
শব্দময়তায় অভিসারের পরিস্পুটন।
রাত শেষে হয় ভোর
কোলাহল খোলে দোর,
কর্মক্লান্তি অবসাদে আসে সে রাতের ক্ষণ।
সুখ দুখের খেলায়
বর্ণিল রঙ্গ মেলায়
এঁকে যায় রাত মহাকালের চিত্র অঙ্কন।
তোমারি অপেক্ষায়
রোজ সুগন্ধিটা রেখে দাও যতনে,
কোন এক বসন্তের গোধূলীলগ্নে
মেখো তোমার তোমার প্রেয়সীর অস্তিত্বকে
ও তার উপস্থিতিকে স্মরণ করাবে বার, বার,
ভুলতেই দেবেনা কখনও কোনমতে।
বলোতো কতদিন দেখিনি তোমায় নিয়ে
ঝক-ঝকে চাঁদের আলো
কোন এক জ্যোৎস্না ভরা রাতে।
আর সে নীল চুড়ি ও নীল শাড়ী অঙ্গে ধরে
তোমার প্রিয় ফুল গন্ধরাজ খোঁপায় পরে
আসার পথ চেয়ে তোমার জন্য থাকি অপেক্ষায়,
ভাবনার জগতে ফিরে অনুভবে পাই যেন তোমায়,
আর,নীরব হয়ে যাওয়া পৃথিবীর কোলাহলে
চোখে আবেশী হাত বুলায় মোহ,
এসে কানে,কানে বলে—
জগত সংসারে মায়া চাদরে লুকিয়েছি ক্ষণিক মুখ
তোমার জন্য এ অপেক্ষায় পেয়েছি মোহিনী সুখ।
কি এক বিমুগ্ধ আবেশে ভরে যায় যেন অন্তর।
সোনালী স্বপ্নেরা দু’চোখে খুঁজে সুখ সমুদ্র তীর।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বাবার মুখে শুনছি কতো
মুক্তিযুদ্ধ গল্প শতো
অবাক হয়ে রই,
মুক্তি সেনা লড়াই করে
পিছু কভু যায়নি সরে
এলো বিজয় লই!
মায়ের কণ্ঠে শুনছি আমি
একাত্তরের মু ক্তি কামী
শতো কণ্ঠের গান,
আজও আমি মায়ের সাথে
সে গান গাহি সন্ধ্যা প্রাতে
জুড়ায় মনো প্রাণ।
ছোট্ট কালে দাদুর মুখে
শুনছি কতো গল্প সুখে
পাক বাহিনীর হার,
এদেশ বাসী কেমন করে
জয়ের নেশা মনে ধরে
করলো দস্যু পার।
আজকে আমি স্বাধীন দেশে
আছি যেনো রাজার বেশে
কারো অধীন নই।
তাইতো আজও তাঁদের স্মরি
গড়বো স্বদেশ বুকে ধরি
এই চেতনা লই।