আকাশে বরুণে দূর স্ফটিক ফেনায়
ছড়ানো তোমার প্রিয়নাম,
তোমার পায়ের পাতা সবখানে পাতা–
কোনখানে রাখবো প্রণাম।
গহন ঘন ছাইল গগন ঘনাইয়া। রবি গেলেন অস্তাচলে খরমধ্যাহ্নে। তিনি রবীন্দ্রনাথ।বিশুদ্ধ মননশীলতা থাকলে একজন সৃজনশীল মানুষ যে তার সৃষ্টিমুখ থেকে উৎসারিত স্রোতকে শতধারায় প্রবাহিত করতে পারেন তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত তিনি।সহস্র ধারায় গতিময় তাঁর সৃজনশীলতা।
তাঁর প্রতিবাদী সত্তা সোচ্চার হয়েছে বারে বারে তাঁর দৃপ্ত উচ্চারণে,শানিত কলমে।হিজলি জেলে বন্দিদের ওপর অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল তাঁর কলম।জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যালীলার বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় নেতারা সক্রিয় না হওয়ায় মর্মবেদনাক্লিষ্ট কবি ব্রিটিশরাজ প্রদত্ত ‘নাইটহুড’ ত্যাগ করেন। এতটাই তীব্র ছিল তাঁর ধিক্কার যে দীনবন্ধু আন্ড্রুজ যখন কুন্ঠিত কন্ঠে নিবেদন করলেন,ভাষাটা আর একটু মোলায়েম করলে হত।উত্তরে দীনবন্ধু পেয়েছিলেন নীরব ভর্ৎসনা। ‘I have never seen such a look in his eyes.’
যে’বেয়াড়া রকমের ভালো’ শরীরের গর্ব করতেন তিনি,তাতে ভাঙনের লক্ষণ দেখা দিল ১৯৩৭ সালে। হঠাৎই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেরেও উঠেছিলেন। ১৯৪০এ ভাঙনের দ্বিতীয় পর্যায়।অগাস্টের ৭ তারিখ।অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কবিকে ‘ডক্টরেট,’ডিগ্রি প্রদানের অনুষ্ঠান। ‘গীতাঞ্জলি’প্রকাশের পরেই এই সম্মাননা প্রদানের কথা ছিল। এক ভাবঘন অনুষ্ঠানে ভারতের ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতি স্যার মরিস গয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কবিকে মানপত্র প্রদান করবেন। অক্সফোর্ডের বহু কৃতবিদ্য ব্যক্তি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত।ক’দিন ধরেই কবির অল্প অল্প জ্বর হচ্ছিল। পুত্র রথীন্দ্রনাথ সহ হিতার্থীরা তাঁকে নিষেধ করলেন উপাসনা সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে।উত্তরে বললেন,’মন্দিরের কাজটা আমার সমস্ত আশ্রমের অন্তরের জিনিস।এখানকার বিদ্যালয়ের প্রতিদিনকার জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত। বিদেশি অতিথি যাঁরা এসেছেন,তাঁরা এ জিনিসটা দেখে না গেলে এখানকার সত্যরূটিই দেখতে পাবেন না। আমাকে তোরা সবসময়ই কষ্ট হবে,ক্লান্তি হবে বলে ছোটো করে দেখিস নে।’শরীর ক্রমশ খারাপের দিকে।হাঁটতে কষ্ট হয়,দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসছে। অরুচিবোধ।গিরিডি যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিছুদিন বিশ্রামের জন্য।কিন্তু নিয়ে যাওয়া হল কালিম্পং। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন।২৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়লেন।পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীর বার্তা পেয়ে একদল চিকিৎসক তাঁকে কলকাতা নিয়ে আসেন। প্রায় দু’মাস শয্যাশায়ী থাকার পর ২৯ নভেম্বর শান্তিনিকেতনে ফেরেন।
২৪ জানুয়ারি,১৯৪১ মাঘোৎসবের শেষ ভাষণ। ঐ বছরই ১৪ এপ্রিল নববর্ষের শেষ ভাষণ–‘সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধ পাঠ।.১৩মে ত্রিপুরারাজের প্রতিনিধিরা এসে তাঁকে ভারত ভাস্কর উপাধিতে সম্মানিত করেন। তাঁর শল্যচিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের মধ্যে শলাপরামর্শ চলছে। কবিরাজ বিমলানন্দ তর্কতীর্থ কিছুদিন কবিরাজি চিকিৎসা করলেন। এলোপাথরা চাপ দিচ্ছেন ‘অপারেশন’ এর জন্য। কবি নিজেও অপারেশনের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। ৯জুলাই কলকাতা থেকে দু’জন চিকিৎসক এসে অপারেশনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে গেলেন। ওঁরা চলে যেতেই তিনি রানী মহলানবিশকে বললেন,’দেখো রানী,আমি কবি–আমি সুন্দরের উপাসক। বিধাতা আমার দেহখানা সুন্দর করে গড়েছিলেন। এখান থেকে বিদায় নেবার সময়,এই দেহখানা তেমনি সুন্দর অবস্থাতেই তাঁকে ফিরিয়ে দিতে চাই। —ফুলের মতো,ফলের মতো,শুকনো পাতার মতো আমার স্বাভাবিক পরিসমাপ্তি ঘটুক। ‘স্বনামখ্যাত ড.নীলরতন সরকার কিন্তু শল্যচিকিৎসার পক্ষপাতী ছিলেন না। কবির মুখে রুচি নেই,একা একা উঠে দাঁড়াতে পারেন না,জ্বরও ওঠানামা করছে। কিন্তু পরিহাসপ্রিয়তা কমে নি। গোমড়া মুখের কোন সেবক যেমন তাঁর পছন্দ ছিল না, নিজেও তেমনি গোমড়া মুখে থাকতে ভালবাসতেন না। একটু ভাল বোধ করলেই হাসিঠাট্টায় মেতে উঠতেন।
২৫ জুলাই শান্তিনিকেতন থেকে শেষ যাত্রা। ভোর চারটে থেকে তৈরি হয়ে উদয়ন গৃহের পূবদিকের জানলার ধারে বসে আছেন। আশ্রমের ছেলেমেয়েরা ‘এ দিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার,আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল ওল কার’ গাইতে গাইতে নম্র প্রণতি নিবেদনে জানলার নীচে এসে দাঁড়ালো। তাদের সৌভাগ্য হয় নি এতদিন গুরুদেবকে দেখার। গেয়ে উঠলো তারা–আমাদের শান্তিনিকেতন সব হতে আপন। কবিকে চেয়ারে বসিয়ে নামানো হল। পরে স্ট্রেচারে শুইয়ে একটি বড় গাড়িতে তোলা হল। তিনি হাতলের ওপর ভর দিয়ে চশমা চোখে অর্ধশায়িত অবস্থায় আশ্রমের চারিদিক দেখতে দেখতে চলেছেন। পেছনে মোটরগাড়িতে পুত্র রথী,রানী মহলানবিশ ও কন্যা মীরা। কবির গাড়ির চালক বুঝি ইচ্ছে করেই আস্তে আস্তে সমস্ত আশ্রম প্রাঙ্গণ ঘুরিয়ে নিয়ে চলেছেন। বোলপুর যাওয়ার পথে অগণিত মানুষ নমস্কারমুদ্রায় অবনত চিত্তে কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। চিৎকার নয়, জয়ধ্বনি নয়, নীরব সম্ভাষণ। তদানীন্তন ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়েজের উচ্চপদস্থ আধিকারিক নিবারণচন্দ্র ঘোষ তাঁর সেলুন কারে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কলকাতা পৌঁছে দু’দিন ধরে বেশ জ্বর।ইনজেকশন চলছে।এরই মধ্যে দু’দিনে দু’টি কবিতার জন্ম হল। নিজে লিখতে পাচ্ছেন না, মুখে মুখে বলে যাচ্ছেন। তাঁকে জানানো হচ্ছে না কী ধরনের অপারেশন হবে বা কবে তা হবে।
৩০জুলাই,১৯৪১ পূবের বারান্দায় অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত করা হল। এরই মধ্যে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশকে যুদ্ধের খবর জিজ্ঞেস করলেন। রাশিয়ানরা এগোচ্ছে শুনে প্রসন্নমুখে কবি বললেন, পারলে ওরাই পারবে।’ সেদিনই সকাল সাড়ে ন’টায় মুখে মুখে বললেন জীবনের শেষ কবিতা।রানী চন্দ লিখে নিলেন—
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে,
হে ছলনাময়ী।
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে।
এগারোটার সময় স্ট্রেচারে করে বাইরে এনে টেবিলে শুইয়ে দেওয়া হল। অপারেশন শেষে বারোটার সময় তাঁকে নিজের খাটে এনে শোয়ানো হল। রানী আর প্রশান্তকে দেখে বললেন, ‘জ্যোতি (চিকিৎসক) মিথ্যে কথা বলেছে। কেন বলেছিল যে,কিচ্ছু লাগবে না। আমার খুব লেগেছে–এত কষ্ট হচ্ছিল যে আমি জোর করে ঠোঁট টিপে চোখ বুজে পড়ে রইলুম– পাছে আমার মুখ দিয়ে কোনোরকম আর্তনাদ বেরিয়া যায়।’ বলতে বলতে তারঁ চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। পরদিন থেকে জ্বালা করছে,ব্যথা করছে বলছেন।.১আগস্ট থেকে শুরু হল হিক্কা। বড় এলাচ গুঁড়ো আর মিছরি খাওয়ালে কিছু আরাম বোধ হল, কিন্তু তা সাময়িক। বৃক্ক(কিডনি) ঠিকমতো কাজ করছে না। প্রশ্ন করলেই চমকে চমকে উঠছেন। কোনরকমে ‘হ্যাঁঁ, ‘না’ বলছেন।আচ্ছন্ন অবস্থা।ইউরিনের পরিমাণ বাড়ছে না।.২ তারিখে ড.বিধানচন্দ্র রায় এসে দেখে গেলেন। কী আশ্চর্য! তিনি যাওয়ার সময় মেয়েদের কিছু টোটকা জানা থাকলে ব্যবহার করতে বললেন।কিডনি কাজ না করায় মাথাও ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। ওষুধ পথ্য খাওয়াতে গেলে বলতেন ‘আর জ্বালিও না আমাকে’।৩অগাস্ট কিছু খাওয়ানো অসাধ্য হয়ে দাঁড়ালো। ৪তারিখ সকালে একটু জল খেলেন। শান্তিনিকেতন থেকে অসুস্থ প্রতিমা দেবী এসে পৌঁছেছেন। তাঁর হাতে একটু জল খেয়ে খুশি মনে হল।.৪ তারিখ নীলরতন সরকার ও বিধান বাবু এলেন। একটু জল খাওয়াতে বললেন। কিছুটা ভেতরে গেল,বাকিটা গড়িয়ে পড়লো। নীলরতন সরকার গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন পরম মমতায়। যাঁর হাতের জাদুস্পর্শে মৃত্যুপথযাত্রীও জীবন ফিরে পেতো্ তিনিও আজ অসহায় দর্শকমাত্র। তিনি চলে যেতেই কবির দু’চোখের পাশ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। বিদায়ের পূর্ব সংকেত।.৬অগাস্ট বোঝা গেল আর কিছু করার নেই। শেষ চেষ্টা একবার করা হয়েছিল যদি কবিরাজ বিমলানন্দ তর্কতীর্থকে দেখানো যায়। কিন্তু বিধানবাবু সে প্রস্তাবে সম্মত হলেন না। সন্ধেবেলা চীনাভবনের অধ্যাপক বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে জপমালা সহযোগে ইষ্টমন্ত্র জপ করতে করতে উপাসনা করলেন।কবি পূর্বশিয়রি। আকাশে তখন পূর্ণচন্দ্র। কবির দেহে স্যালাইনের নল। সাত তারিখ সকালে অজ্ঞান, অচৈতন্য। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় খাটের পাশে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছেন। আকাশে আলো ফুটছে। পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী পায়ের দিকে বসে মন্ত্রপাঠ করছেন। ধ্বনিত হচ্ছে ব্রহ্মসঙ্গীত।
৭ আগস্ট ১৯৪১। ২২শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ ১২-৩০ মিনিটে কবির অনন্তলোকে যাত্রা রাখি পূর্ণিমার অবসানে। বয়স ৮০ বছর ৩ মাস। জোড়াসাঁকোর বাড়িতে তখন জনরোল। আত্মীয় পরিজন কাছের মানুষেরা দিশেহারা। উন্মত্ত জনতা সদর দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইছে। এইবিশৃঙ্খলার মধ্যেই তাঁকে স্নান করানো হল। সাজিয়ে দেওয়া হল নববেশে। শান্ত সমাহিত মুখশ্রী। দেহে কোনো কষ্টের চিহ্নমাত্র নেই।
সাদা বেনারসির জোড়
কপালে চন্দন রেখা
পাট করা চাদর
গোড়ের মালা।
শুভ্র বেশ শুভ্র কেশ
মানিয়েছে বেশ
রাজসিক একাকিত্বে
ঘুমিয়ে রয়েছেন চিরচঞ্চল
আশির তরুণ অক্লান্ত বাউল।
বার বার তিনি রানী মহলানবিশকে বলতেন, “দেখো আমার যেন কলকাতার উন্মত্ত কোলাহলের মধ্যে ‘জয় বিশ্বকবি কি জয়,বন্দেমাতরম’–এই রকম জয়ধ্বনির মধ্যে সমাপ্তি না ঘটে।” কিন্তু সে আশা পূর্ণ হল না।চেয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের উদার মাঠে উন্মুক্ত আকাশের তলায় আশ্রম বালকবালিকাদের মাঝে থাকতে।হয়তো তাঁর পোষা ময়ূরটি নাচ দেখাবে তাঁকে।কবির কাছ থেকে প্রাতরাশের সময় দু’টুকরো মাখনমাখানো রুটি প্রসাদ হিসেবে পেতো কিন্তু কেউ তাকে বিদ্রুপ করলে নীরব অভিমানে যে চলে যেতো সেই আত্মসম্মানী পথসারমেয় ‘লালু’ তাঁকে পাহারা দেবে অথবা প্রিয় নীলমণি লতাটি তাঁর শীতল অঙ্গে স্নেহের পরশ এনে দেবে। কিন্তু ঘটনাচক্রে তা আর হবার নয়। বেলা তিনটে নাগাদ উচ্ছৃঙ্খল জনতা কবির নিথর দেহ নিয়ে শোভাযাত্রা শুরু করলো। উন্মাদ উদ্রাব। অনিয়ন্ত্রিত জনজোয়ার। সত্যি সত্যি ‘বিশ্বকবি কি জয়’ ইত্যাদি ধ্বনি উচ্চারিত হতে লাগলো মুহুর্মুহু। শোভাযাত্রার গতিপথ ছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে আপার চিৎপুর রোড, চিত্তরঞ্জন এভিনিউ,কলেজ স্ট্রিট,সেনেট হল,সাধারণ ব্রাহ্মসমা্জ,বি,কে,পাল এভিনিউ হয়ে নিমতলা মহাশ্মশান।জনচাপে সেনেট হলে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারলেন না। আকাশবাণীতে ধারাবিবরণী দিচ্ছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। কবি নজরুল ইসলাম বেদনার্ত কন্ঠে গাইছেন,’ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে জাগায়ো না জাগায়ো না/সারা জীবন যে আলো দিল ডেকে তার ঘুম ভাঙায়ো না।’ শোকমিছিল মেছুয়াবাজার পৌঁছতেই শুরু হল অঝোর বৃষ্টি। বর্ষা যাঁর প্রিয়তম ঋতু ছিল তাঁর বিদায়বেলায় মহাকাশ বোধ হয় শোকাশ্রু সংবরণ করতে পারে নি।ভিড়ের চাপে পুত্র রথীন্দ্রনাথও শবানুগমন করতে পারেন নি। পরে ঘুরপথে অনেক কষ্টে শ্মশানে পৌঁছলেন।
কপিল গুহার অন্ধকারে বিলীন
নান্দনিক মনন
আমাদের ক্ষীয়মাণ মানসে
সুন্দরের গান বিকৃত নটমল্লারে
এখনও অচিহ্ন যুবক অক্লান্ত হেঁটে
সজীব ভাবনা খুঁটে আনে তোমার দুয়ার থেকে
বাইশে শ্রাবণ চলেছে মহাকালের পুষ্পক রথে...
বাইশে শ্রাবণ চলেছে মহাকালের পুষ্পক রথে...
দূরভাষে খবর এলো শান্তিনিকেতনে। সকাল থেকে আশ্রম ছিল কান্নাঘন। সান্ধ্য উপাসনায় শৈলজারঞ্জন মজুমদার ছাত্রছাত্রীদের তালিম দিয়ে অশ্রুবিজড়িত কন্ঠে গাইলেন, ‘সম্মুখে শান্তি পারাবার, ভাসাও তরণী হে কর্ণধার।’ গানটি এতদিন অ-গীত ছিল.১৯৩৯ সালের কোন এক সময়ে কবি গানটি শিখিয়ে দিয়ে বলেছিলেন– ‘এ গানটি আমার অন্য গানের মতো কাউকে শিখিও না। আমার যখন হয়ে-বয়ে যাবে তখন এ গানটি করে দিয়ো। কিন্তু তখন তুমি আমাকে কাছে পাবে না।’
রাহুর মতন মৃত্যু
শুধু ফেলে ছায়া,
পারে না করিতে গ্রাস জীবনের স্বর্গীয় অমৃত।