শিরনামহীন রাত্রিরা
দেহতত্ত্ব
রাত্রির মতো নির্জন তোমার শরীর। টলমলে দীঘি ভরা জ্যোৎস্না বুকে। আলো আঁধারের ঢেউ।
একটা নদী,একটি তারায় বাজায় একতারা। তুমি তুমি গন্ধে বাউল হয় মেঘ। পাখিরা অস্ত গেলে, পালকের ঘ্রাণে খুলে যায় মারেফাতি দুয়ার। শহরের করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকে তৃষ্ণা।
শাড়ি গলে পরে, উড়ে যায় কাঁচুলি। এবার খুলে দাও লাল ফিতা…স্বর্গে যাবো।
♦
আমি
খুচরো পয়সার মতো খরচ হয়ে যাচ্ছি। কৃষ্ণপক্ষে হাঁটচে চাঁদ। একটা দীর্ঘরাত পাঠ করছি তৃষ্ণা ও তিমির। শিকল বন্দী সকাল; কত সহজে বিক্রি হয়ে যাই। সূর্যের রঙ আফ্রিকার মেয়ের মতো। সূর্যোদয় থেকে মধ্যরাত বিক্রি করি আত্মা ও ইচ্ছে। ভিন্ন নামে পরিচয়ে কৃতদাসের পোষ মানা জীবন; শিকল পরাতে হয়না আজকাল। তবুও তো শিকল বন্দী…
যাপনচিত্রে খরচ করছি জীবন, যেন খুচরো পয়সা। আমি! ছাই খসে পরা সিগারেটের সোনানী ফিল্টার…
♦
ধীর পায়ে হেঁটে যায় চাঁদ, রামকিঙ্করের ভাস্কার্য যেন। আকাশ ভেঙে ভেঙে পরে। টুকরো টুকরো নীল পকেটে ভরে রাখি, অতীত বিকেলের মতো। গতকালের শূন্যতায় নুয়ে পরে বাগান। পাখিদের ঘ্রাণ ভায়োলিনে। তোমার ডানায় উড়ছে সন্ধ্যা। আমি বিষণ্ণ বারান্দায় জ্যোৎস্না লেখি। মূলত তোমাকেই আঁকি ঈশ্বরী…
♦
একচিলতে সন্ধ্যা নুঁয়েপরে কালো কফিকাপে। তিতে স্বাদের চুমু, বিব্রত ডানায় উড়াল শিখে। মোম ও মৃদু আলোয় গলে পরে তারা। কৃষ্ণপক্ষের শরীর জুরে থৈথৈ মেঘ। শ্রীমতি রাধিকার রূপকথায় যমুনা স্নানে সিক্ত হও তুমি। ঢেউ ঢেউ ঘ্রাণ, জল জল নগ্নতা। মগ্নতায় তোমাকেই খুঁজে ব্যাসদেব। রঙে বিভোর হয় ভিঞ্চি…
♦
জলের মতো ঝরে ঝরে পরে মিথ্যেরা। পাতাও পাঁপড়ির আবরণে ঢেকে আছে মেঘ। মায়াবী পুকুরটার তীরে একটুকরো বাগান। উঠোনের ঘাসে বসে থাকে অপেক্ষারা; অপেক্ষা না কি প্রতিক্ষা! বিস্ময় চিহ্নের বিপরীতে বৃষ্টির কোলাজ। তুমি তুমি ঘ্রাণ আকাশের কার্ণিশে। পালঙ্কে বিষাদ ঋতু। পারিজাতের বিষণ্ণতায় পুষে রাখি ঝিনুকের অসুখ। প্রেম টেম ভেসে যাক বিরহ স্রোতে। পিঠ খুলে দাও, ভ্যান গগের ক্যানভাস নত হোক লজ্জায়। যতটুকু দুঃখ চিবুকে, নাভি ও নন্দিত উরুতে মুছে দিবো ওষ্ঠের কোমল তোয়ালেতে। এবার সরল রেঁখার মতো সহজ হয়ে যাক যাবতীয় দ্বন্দ্ব সমাস।
মূলত চাঁদ গাঢ় হয় মিথুন মগ্ন চুমুর মহড়ায় ।
♦
মেঘ পথের ধূলো মেখে
রাত্তির হেঁটে যায় চাঁদের দিকে।