ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ৯ বছরের এক কন্যাশিশুকে শ্মশানঘাটে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর দিল্লি পুলিশ অভিযুক্ত একজন পুরোহিত ও তার তিন সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। দিল্লি সরকার এই ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার করেছে।
বিভিন্ন দলিত সংগঠন অবশ্য বলছে, ধর্ষিতা মেয়েটি যেহেতু দলিত বা নিম্নবর্ণীয় সমাজের তাই এই ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধেও তেমন জোরালো প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লিতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পাশ ঘেঁষেই রয়েছে একটি বাল্মিকী বস্তি, যে সম্প্রদায়ের লোকজন মূলত পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে জীবনধারণ করেন।
যে নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে ওই এলাকার বাসিন্দারা সোমবার থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন, সেটি ঘটেছিল তার আগের দিন রাতেই। নিহত মেয়েটির মা বলছিলেন, ‘আমরা সেদিন গাঁয়ে গিয়েছিলাম, আর আমাদের বাচ্চা শ্মশানঘাটের ওয়াটার কুলার থেকে খাবার পানি নিতে গিয়েছিল। শ্মশানের মন্দিরের পুরোহিত বা পন্ডিতজি আমাদের ফোন করে হঠাৎ খবর দেয়, কুলার থেকে পানি নিতে গিয়ে আমাদের মেয়ে নাকি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। সে রাতেই তাড়াহুড়ো করে ওর সৎকার করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, পণ্ডিতজি আর ওর দলবল আমাদের মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে।’
রাধেশ্যাম নামে মূল অভিযুক্ত ওই পুরোহিতকে সোমবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সঙ্গে আটক করা হয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ, কুলদীপ ও সালিম নামে তার তিনজন সঙ্গীকেও। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যা, ভয় দেখানো ও প্রমাণ লোপাট করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুরানা নাঙ্গাল নামের ওই এলাকায় অবশ্য এখনও পুলিশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তীব্র। অনেকেই বলছিলেন, চারজন অভিযুক্তকে পুলিশই জিপে করে সরিয়ে নিয়ে গেছে। ওই দলিত শিশুর পরিবার গরিব ও বাল্মিকী বলেই বিচার পাচ্ছে না।
এই মুহুর্তে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড ছাড়া তারা যে আর কোনও শাস্তিতেই সন্তুষ্ট হবেন না বাল্মিকীরা সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে।
দিল্লি সরকারের মন্ত্রী রাজেন্দ্র গৌতম ওই বস্তিতে গিয়ে কথা দিয়ে এসেছেন, দোষীদের অবশ্যই উপযুক্ত শাস্তি হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের রাজধানীতে এমন ঘটনা ভাবাই যায় না। উত্তরপ্রদেশের দেহাত অঞ্চলে শোনা যায় ভিকটিমের পরিবারকেই ভয় দেখিয়ে বয়ান বদলাতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু দিল্লিতেও কেন এমন ঘটনা ঘটবে?’