কবি রঞ্জনা রায়ের ছ’টি কবিতা

রঞ্জনা রায়
রঞ্জনা রায়
2 মিনিটে পড়ুন

কন্যাদেহ

ময়ূরাক্ষীর তীর ধরে হাঁটছিলাম
আকাশে ডুবন্ত সূর্যের আলো
আকাশ মাটির ভেদরেখা মুছে দিল
তোমার পাঞ্জাবীর গেরুয়া লাল ।
হাতে তোমার হাত
শরীরে মহুয়া মদের দোলা
রাই হবো আমি –
ময়ূরাক্ষীর বুকে হবো তোমার !

এক আর্ত ধ্বনি
আকাশ বাতাস নদী সাগর অন্তরীক্ষে ।
স্তব্ধ প্রতিধ্বনি
একটি ধর্ষিত কন্যাদেহ পৃথিবীর মাতৃবক্ষে।

বর্গক্ষেত্র

আমার হাজার স্কোয়ার ফিটের শিশ্ মহলে
নেই একটাও ঘুলঘুলি
নেই কোন কাকের বাসা
তিতকুটে ময়লা ধুলো –
আমরা তিনজনেই ফিটফাট মাপসই ।

রোজ রাতে অমল চুমু খায়
ডিজিটাল ঘড়িটাও ঠিকঠাক চলে –
আমাদের এখানে কোকিল ডাকে না
ডিমও পাড়ে না ।

- বিজ্ঞাপন -

বুবুন আর টেডি বিয়ারের বন্ধু বন্ধু খেলা
ওর কম্পিউটার গেমে যুদ্ধের মহড়া !

ঠোঁট

তুমি আমি বসে আছি মুখোমুখি
চোখে চোখ,হাতে হাত
আমার ঠোঁটের অনুভবে
এখন ঈষৎ বাদামি ঠোঁটের বিদ্যুৎ!

তুমি আমি বসে আছি মুখোমুখি
চোখে চোখ,হাতে হাত
সাগর-মোহনায় ঝড় ওঠে
বালুকনা জমা হয় দুটি ঠোঁটের ব্যবধানে।

জুঁইফুলের মালা

ওই উদ্ধত বুকের ভেতর নীড় বাঁধবো বলে
মেলেছি দুটি ডানা
ঝড় আসে বার বার
ডানা কেঁপে ওঠে –
তবুও বার বার
খুঁজেছি একটু আশ্রয় –
স্নিগ্ধ জুঁইফুলের একটি মালা

দূরে–কাছে

আমার শাড়ির ভাঁজে
গহন রাত্রি নামে
তুমি ঘুমোও দূরে
কৃষ্ণা নদীর ওধারে ।

- বিজ্ঞাপন -

দূরত্বের এতটুকু আঁচ লাগে না মনে
রক্তকনিকার অন্তরে তোলপাড়
তুমি ঘুমোও যেন কাছে ।

দহনে

সেই নিবেদনের ভঙ্গী থেকে একটা স্বপ্ন জন্ম নেয়
সেই চোখের জাদুতে ঢাকা পড়ে গেছে অমাবস্যার উদ্ভাস
আজও স্মৃতির প্রকোষ্ঠে ধুনি জ্বলে
শরীরের মাধবীকুঞ্জে উষ্ণ জোয়ার জাগায় ।

শীত আসে, রোজই দহন
এক নিঃসঙ্গ উন্মাদনায় –
সেই নিবেদনের ভঙ্গী থেকে আবার একটা স্বপ্ন জন্ম নেয়
দহনে সূর্যমুখীর

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার অন্তর্গত কোতাইগড়--- তুর্কা এস্টেটের জমিদার বংশের সন্তান রঞ্জনা রায়। জন্ম, পড়াশুনা ও বসবাস উত্তর কলকাতায়। বেথুন কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে সাম্মানিক স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উপাধি লাভ করেন। ১৯৭০ সালের ৩০শে মে রঞ্জনা রায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম স্বর্গীয় জগত কুমার পাল, মাতা স্বর্গীয় গীতা রানি পাল। স্বামী শ্রী সন্দীপ কুমার রায় কলকাতা উচ্চ ন্যায়ালয়ের আইনজীবী ছিলেন। রঞ্জনা উত্তরাধিকার সূত্রে বহন করছেন সাহিত্যপ্রীতি। তাঁর প্রপিতামহ স্বর্গীয় চৌধুরী রাধাগোবিন্দ পাল অষ্টাদশ দশকের শেষভাগে 'কুরু-কলঙ্ক’ এবং 'সমুদ্র-মন্থন’ নামে দু'টি কাব্যগ্রন্থ রচনা করে বিদ্বজনের প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। ইতিপূর্বে রঞ্জনা রায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'এই স্বচ্ছ পর্যটন’ প্রকাশিত হয়েছে এবং তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'ট্রিগারে ঠেকানো এক নির্দয় আঙুল' সাহিত্যবোদ্ধাদের প্রভূত প্রশংসা পেয়েছে। তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ 'নিরালা মানবী ঘর' (কমলিনী প্রকাশন) ও চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ 'ইচ্ছে ঘুড়ির স্বপ্ন উড়ান' (কমলিনী প্রকাশন) দে’জ পাবলিশিংয়ের পরিবেশনায় প্রকাশিত। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় কবির কবিতা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশিত হয়ে চলেছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!