আমাদের এই রাজ্যে চাকরির বাজার কোন জায়গায় এসে পৌঁছেছে তা জানার জন্য সম্প্রতি একটি খবরে চোখ বোলালেই মালুম হবে।
কিছু দিন আগে এন আর এস মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, ডোম পদে মোট ৬ জনকে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ওই পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন আট হাজারেরও বেশি প্রার্থী।
আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ২২০০ জনের মতো স্নাতক ডিগ্রিধারী, রয়েছেন ৫০০-র কাছাকাছি স্নাতকোত্তর। এমনকি ডোম হতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন ১০০-রও বেশি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ছাত্রছাত্রী।
তার মধ্য থেকে ঝাড়াই-বাছাই করে ডাকা হয়েছে ৭৮৪ জনকে। সেই ৭৮৪ জনের মধ্যে ৮৪ জন মহিলা। বাকিরা পুরুষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১ অগস্ট তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে চাকরিতে বহাল করা হবে ৬ জনকে।
যে পদের নাম শুনলে এক সময় ছেলেমেয়েরা এক মাইল দূর থেকে হেঁটে যেত, সেই পদের একটা চাকরির জন্য একশোরও বেশি ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রিধারী আবেদন করেছেন!
অবশ্য আবেদন না করেইবা কী করবেন! গোটা রাজ্যে কোথাও কোনও শিল্প নেই। নতুন কোনও কল-কারখানাও তৈরি হচ্ছে না। শিল্পপতিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এই রাজ্য থেকে।
সেটা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে এই মহামারির সময়ে। সরকারি চাকরি তো নেই-ই। সরকারি অফিস কাছারিতে এখন বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে।
নিয়োগ হলেও যে সেখানে নিয়মিত মাইনে পাচ্ছেন তাও নয়। এই তো দিন কতক আগে আর জি কর হাসপাতালের ৫৭৫ জন চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী পথে নেমেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা ঠিক সময়ে তাঁদের মাইনে পাচ্ছেন না।
সে জন্য তাঁরা আর জি কর রোড অবরোধ করেন। তাঁদের অবরোধে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হয়। পরে তাঁরা হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
তাঁরা দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও সাড়া পাননি। এর পরেও যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথা বিবেচনা না করেন তা হলে আরও বড় আন্দোলনে তাঁরা শামিল হবেন।
আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ওরা আমাদের স্টাফ নয়, ওরা যে বেসরকারি সংস্থার কর্মী তাঁদের সঙ্গেই ওঁদের বুঝে নিতে হবে।
এ কোন রাজ্যে বাস করছি আমরা!