করোনা মহামারির এই সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় টিকা। মানুষ এতকাল অপেক্ষা করেছিল টিকার জন্য। করোনা নিয়ে এখনও বহু কিছুই বিজ্ঞানীদের অজানা। কোন টিকা কত দিন সুরক্ষা দেবে, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। এসব অনিশ্চয়তা থেকে সন্দেহ তৈরি হয়। তাই ভয় কাটছে না রোগটি সম্পর্কে। তারই মধ্যে কোনও কোনও ব্যক্তি বা ইন্টারনেট মাধ্যমে এমন কিছু দাবি করে বসছেন, যা ভয় এবং সংশয়ের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
যদিও সেই দাবিগুলোর অনেকগুলোই ভুল। কিন্তু ঠিক-ভুল বিচারের আগেই তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে নেটমাধ্যমে।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তরফে এমনই কয়েকটি ভুল তথ্যের সংশোধনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। রইল তেমনই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ভুল তথ্য: করোনাকালে মৃত্যুর হার মোটেই বাড়েনি
নেটমাধ্যমে এমন একটি তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনাকালে মৃত্যুর হার বাড়েনি। যদিও এটি মোটেই ঠিক নয়। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সংবাদ সংস্থা বিবিসির এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র সে দেশেই ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে ৮ হাজারের বেশি মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছে। দাহ করা হয়েছে ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে। করোনাকালে অন্যান্য বছরের তুলনায় ১ লক্ষের বেশি মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।
টিকাবিরোধী মঞ্চগুলোর তরফেও এমন কথা প্রচার করা হচ্ছে। আমেরিকায় এমন একটি মঞ্চের তরফে প্রচার করা হয়েছে, শুধুমাত্র সে দেশেই নাকি ৫১ হাজারের বেশি মানুষ টিকার কারণে মারা গিয়েছেন। সরকারের তরফে সেই তথ্য গোপন করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি তা নয়। পরিসংখ্যান বলছে, টিকা নেওয়ার পর আমেরিকায় মারা গিয়েছেন ৬ হাজার কিছু বেশি মানুষ। কিন্তু প্রমাণ রয়েছে, তাদের মৃত্যুর কারণ টিকা নয়। বার্ধক্যজনিত বা অন্য দূরারোগ্য ব্যাধীতেই মৃত্যু হয়েছে তাদের।
টিকাবিরোধী বিভিন্ন মঞ্চ এবং সংগঠনের তরফে এমন কথা প্রচার করা হচ্ছে। দুইটি টিকা নিলেও নাকি কমছে না হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা। যদিও বিজ্ঞানী এবং করোনাবিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক ভালান্স এক পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ৬০ শতাংশের একটি টিকাও নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি নানা মহলে এমন দাবি উঠেছে, যাদের অতিরিক্ত মেদের সমস্যা নেই, তাদের টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এমনকি আমেরিকার রিপাবলিকান দলের নেত্রী টেলর গ্রিনও দাবি তুলেছেন, সেনাদের টিকা দেওয়ার দরকার নেই বলে। কারণ সেনাবাহিনীর কেউ মেদের সমস্যায় ভোগেন না। নানা মহল থেকে এই মন্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে। অতিরিক্ত মেদ নিঃসন্দেহে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, যাদের অতিরিক্ত মেদের সমস্যা নেই, তারা করোনা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ।