খেলাপি ঋণে জর্জরিত তারা, গ্রাহকদের জমানো টাকা ফেরতও দিতে পারছে না। তারপরও সুদের লোভনীয় অফার দেখিয়ে আমানত (অর্থ) সংগ্রহের চেষ্টা করছে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব প্রতিষ্ঠান এসএমএসের মাধ্যমে আমানতকারীদের দিচ্ছে এমন প্রলোভন!
সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট (একক সংখ্যা) সুদহারের কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ শতাংশেরও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এসব কারণে ফার্স্ট ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ফিক্সড ডিপোজিটে বাৎসরিক সাড়ে নয় শতাংশ সুদের প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকদের কাছে এসএমএস পাঠিয়েছে ফার্স্ট ফাইন্যান্স। এ বিষয়ে জানতে এসএমএসে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) গোলাম মহিউদ্দিন জানান, তিন প্রক্রিয়ায় ইন্টারেস্ট পাওয়া যাবে। প্রতি মাসে, তিন মাস অন্তর এবং এক বছর পর লাভ ও আসল উত্তোলনের সুযোগ।
সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট (একক সংখ্যা) সুদহারের কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ শতাংশেরও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এসব কারণে ফার্স্ট ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটের কথা বলা রয়েছে। এরপরও ফার্স্ট ফাইন্যান্স কীভাবে সাড়ে নয় শতাংশ সুদ দেবে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ছয়-নয় নির্দেশনা ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। আমরা (আর্থিক প্রতিষ্ঠান) ব্যাংকের চেয়ে আরও ছয় শতাংশ বেশি সুদে ঋণ দিতে পারি। তাই এ অফার দেওয়া হয়েছে। ২৮ বছর ধরে ফার্স্ট ফাইন্যান্স সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে। কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়।’
এ বিষয়ে জানতে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ মঈনুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহের বিষয়ে বোর্ডে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি ম্যানেজমেন্টের বিষয়, তারা হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শোকজের বিষয়টিও আমি জানি না। এমডির সঙ্গে কথা বললে জানতে পারব।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে আমানত সংগ্রহের জন্য কারও মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৮ সালের ২৬ জুন জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান উচ্চ সুদহারে আমানত সংগ্রহের জন্য পেশাজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের গ্রাহকের মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠাচ্ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিব্রতকর। এ প্রবণতা থেকে বিরত থাকতে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হলো।