রঙ
ওয়াল পেপার আর পর্দার রঙ মেলাতে ক্যাটালগের পাতা ওলটাই
রঙ আর রঙের গোলকধাঁধার মধ্যে অন্ধকার কানাগলি
রঙ মেলাবোই –
নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়
পর্দা আর ওয়াল পেপারের রঙ
মিলেমিশে এক হবে অনুরাগে –
এক দুর্ধর্ষ বাস্তবের কল্পিত-কলা।
রঙে রঙ মেলাবার ইন্দ্রজাল
মনে মন মেলাবার জাদুকাঠি।
এখন আকাশে যুদ্ধের রঙ
মাটিতে রক্তের অসহায় রঙ
দিনের পর দিন এইসব রঙ
অস্বিত্বের ভেতরে হেঁটে চলে
ভয় এক অন্ধ রঙের আস্তরণ।
পর্দার রঙ ওয়াল পেপারের রঙ মেলাতে বসে –
ক্যাটালগের পাতায় হঠাৎ
এক চেতনাহীন রঙ ক্রমশ উজ্জ্বল হয়।
সোনালি মোহর
একটা ধ্বংস স্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে আছি ,
হরপ্পা কিংবা নালন্দা বিহার,
এই সব ধ্বংস স্তূপের নীচে ঘুমানো অভিশাপ
এখনো কি ইথার তরঙ্গে
ভবিষ্যতের স্বপ্ন গালিচা বোনে?
নির্মাণের উৎসবে লেখা হয় ধ্বংসের অনুলিপি
সৃষ্টি সাজে সুখের নিশ্চিত মোড়কে
ঋতুরঙ্গে ছন্দ থেকে ছন্দান্তর।
আমরা সবাই ছোট ছোট নিজস্ব দ্বীপে
গর্ত খুঁড়ি গুপ্তধনের আশায়
জীবনের সোনালি মোহর হারিয়েছে কোন অন্ধকারে?
বিস্ময়
বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
কমলালেবু মসৃণ ভোরের শান্ত রোদ।
দরজার ওপারে আলো অন্ধকারের
জাফরি কাটা পুরনো সকাল আর বিকেল।
যেমন প্রাচীন বটের অসংখ্য ঝুরির জালে
অজাত স্বপ্নেরা বৃদ্ধ হবার শঙ্কায় কেঁপে ওঠে।
‘বেলা যে পড়ে এল, ওপারে চল্”
ঝড় এসে ডাক দেয়
ভাঙতে চায় দরজার কঠিন অর্গল-বন্ধন।
অমাস্যার মুদ্রিত আলোয় যাত্রা শুরু
লক্ষ্যের অন্তিমে পূর্ণ চান্দ্রেয়ী আসর।
এক কারিগর অবিরাম গড়েন আর ভাঙেন
কেন?
এক উত্তরহীন প্রশ্ন, বিস্ময় বুকের পাঁজরে …
দহন
সেই নিবেদনের ভঙ্গী থেকে একটা স্বপ্ন জন্ম নেয়
প্রকাশের বর্ণালী বাহারে ম্লান রূঢ় বাস্তবতা
সেই নিওন উজ্জ্বল চোখের জাদুতে
হয়তো ঢাকা পড়ে গেছে –
অমাবস্যার সত্য উদ্ভাস।
হেমন্তের শষ্যহীন মাঠে
বিষণ্ণতা মেলে দেয় বিবর্ণ কাঁথা,
বিগত জন্মে জারদৌসি নকশায় সাজানো
তোমার সবুজ উত্তরীয়
আজও স্মৃতির প্রকোষ্ঠে ধুনী জ্বালে
শরীরের মাধবী কুঞ্জে উষ্ণ জোয়ার জাগায়।
শীত আসে –
এক নিঃসঙ্গ সাঙ্কেতিক উন্মাদনায়
সূর্যমুখীর হলুদ শিরায়
শীতলতা ধূসর হয় ।
মগ্নতার অন্তিম প্রহরে –
শুধুমাত্র শ্বাপদীয় নিঃশ্বাসের ধীর ছন্দ।
যান্ত্রিকতার সাজুয্যে টিকে থাকার অসহ যুদ্ধে
রোজই দহন –
আফিম– বশ্যতায় সংগম।
লীনতাপ
মডিউলার কিচেনের কোণেও ধুলো জমে
কিছুটা তেলচিটে ভাব ওয়াল পেপারে –
সবকিছু ফিটফাট করতে চেয়েও
কেন ধ্বংস কনারা উচ্ছ্বল হয়?
তাসের ওপর তাস সাজানোর ছলে
গড়ে ওঠে ঘর –
আবার ভেঙেও যায় সাজানোরই কৌশলে।
ঝরাপাতার সবটুকু উত্তেজনা বুকে নিয়ে
এক আগন্তুকের সন্ধানে পথ হাঁটা –
হেমন্তের বিষণ্ণ বিকেলে
কিচেনের কোণে, বেডরুমের দেয়ালে
জমাট বাঁধা বরফের লীনতাপ –
কোন বারুদেই বিস্ফোরিত হবে না জেনে
বেডকভারের জংলা নকশার ভাঁজে
বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির ফোঁটা জমতেই থাকে।
হিস্ হিসে অন্ধকার
আলো কিংবা আলোর বিপরীতে –
অন্ধকারের প্রান্তিকতায় দাঁড়িয়ে
প্রত্যাবর্তনের দিক্ নির্ণয় করি।
সময়ের কররেখা নিজেকে গুছিয়ে নেয়
অগণিত দিনান্তের জাফরানি আলোয়।
স্বয়ংবরা রমণীর মত এক দুরাশার মায়ায়
হরধনু ভঙ্গের আস্ফালন,
মেনে নিতে হয় মৃত ইঁদুরের গর্তে।
শাঁখা সিঁদুরের চৌখুপী মাপে –
মাপসই হয় না যখন যাপিত জীবন চিত্র
তখনও কি প্রেম চোয়ানো একবিন্দু জল
শুধুই মেটামরফসিসে্র নামান্তর?
আন্তিগনের হাহাকার, অম্বার অগ্নিদহন
বুকে নিয়ে লড়াইয়ের হাতিয়ার খুঁজি
বারশো বর্গ ফিটের হিস্ হিসে্ অন্ধকারে …