বরিশালে বেশীরভাগ চামড়া আসছে মাদ্রাসা থেকে, সংগ্রহে তোড়জোড় নেই ব্যবসায়ীদের

বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন
ছবি: সাময়িকী

ব্যবসায়ে মন্দা,আর্থিক সংকট ও সংগ্রহের ব্যয় না ওঠার শঙ্কায় বরিশালের বাজারে চামড়া সংগ্রহ নিয়ে তোড়জোড় নেই ব্যবসায়ীদের মাঝে।

হয় হ্যাচকা দামে নয়তো বাকিতে চামড়া সংগ্রহ ও কিনছেন ব্যবসায়ীরা। দর না থাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা মাঠ পর্যায়ে চামড়া সংগ্রহ করেননি। তবে মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন এতিমখানা’র লোকজন পাইকারদের কাছে চামড়া নিয়ে আসছেন ।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এবারে বাজারে চামড়া নিয়ে আসা সরবরাহকারীদের মধ্যে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সংখ্যা খুবই কম।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের হয়ে বাজারে চামড়া নিয়ে আসা ব্যক্তিরা বলছেন,দর না থাকায় তারাও তেমন একটা চামড়া ক্রয় করেননি। বেশিরভাগ চামড়াই এলাকাভিত্তিকভাবে বিনামূল্যে সংগ্রহ করছেন।

- বিজ্ঞাপন -

তবে সেসব চামড়া সংগ্রহ করে বাজার পর্যšত আনতে যানবাহনের যে ব্যয় হচ্ছে তাও এখন দিতে চাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

বুধবার বিকেলের দিকে নগরী থেকে এবং বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মফস্বল থেকে আসা কিছু চামড়া সংগ্রহকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ টাকা পেয়েছেন বলে জানান।

বরিশালের পদ্মাবতী এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী শামিম উল্লা বলেন, এবারে চামড়া সংগ্রহের কোন ইচ্ছাই ছিলো না আমার। তাই কোরবানির দিন বিকেল পর্যন্ত বাসাতেই ছিলাম। বিকেলে কিছু লোক, যারা বিগত সময়ে বিশ্বাস করে চামড়া দিয়েছেন তাদের ফোনে আসতে বাধ্য হয়েছি।

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাছে লাখ লাখ টাকা আটকে থাকায় এখন নিজের কাছে থাকা ও ধার করা সামান্য কিছু টাকা নিয়ে চামড়া কিনতে বসেছি। বলতে পারেন দীর্ঘদিনের অভ্যেসের কারনেই চামড়া কিনতে বসেছি।পরিচিতোদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চামড়া সংগ্রহ করছি। সেখানে হয়তো বাকিতে আর নগদ মিলিয়ে নিজে সর্বোচ্চ ৬ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করতে পারি।

ঈদের আগে যদি ট্যানারি মালিকরা পাওনা থেকে কিছু টাকাও দিতো তাহলে হয়তো আরো চামড়া সংগ্রহ করা যেতো বলে বলে চামাড়পট্টির চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান।

- বিজ্ঞাপন -
Barishal Photo Workers busy in primary processing of collected hide and skin in a dull market at Barishal due to pandemic and shortage of capital 3 বরিশালে বেশীরভাগ চামড়া আসছে মাদ্রাসা থেকে, সংগ্রহে তোড়জোড় নেই ব্যবসায়ীদের
বরিশালে বেশীরভাগ চামড়া আসছে মাদ্রাসা থেকে, সংগ্রহে তোড়জোড় নেই ব্যবসায়ীদের 37

অন্য দিকে চামড়া ক্রেতারা বলেন সরকার নির্ধারিত রেটে তারা যেমন কিনতে পারছেন না, তেমনি সবাইকে টাকাও দিতে পারছেন না। করোনার কারনে এবার কোরবাণীও কম হয়েছে। সার্বিক ভাবে গরু/ছাগল মিলিয়ে ৭/৮ হাজার পিস চামড়াও বরিশাল মার্কেটে সংগ্রহ হবে কিনা সন্দেহ।

তারা বলেন,বরিশালে সর্বোচ্চ ১৮ ফুটের ওপরে চামড়া পাওয়া যায়না, আর তাও খুব কম। তবে সব চামড়ার দরই আলোচনা করে ঠিক করে কিনতে হচ্ছে,বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নির্ধারিত রেটে কেনা যাচ্ছে না।

এবারে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের থেকে মাদ্রাসার লোকজনই চামড়া নিয়ে আসছেন বলে তারা জানান।

- বিজ্ঞাপন -

অন্যদিকে চামড়া বিক্রেতারা বলেন, যাও দাম পেয়েছি তা রেট অনুযায়ী নয়, খুবই হতাশাব্যঞ্জক হ্যাচকা দরে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নির্ধারিত রেট পাওয়া যাচ্ছে না।

বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক নাছিরউদ্দিন বলেন,এক সময়ে বহু চামড়া ব্যবসায়ী বরিশালে থাকলেও ট্যানারি মালিকদের কাছে টাকা আটকে যাওয়ায় এবং ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ায় এখন তা কমে এসেছে। অনেকে ব্যবসার ধরণও পাল্টে ফেলেছেন। এবার মাত্র দু’/তিন জনে চামড়া সংগ্রহ করছি।

চামড়া ক্রেতারা আরো বলেন, মন্দা ব্যবসায়ের কারনে কিছু বাকিতেও অর্থাৎ পরবর্তীতে টাকা দেয়ার শর্তেও কিনতে হচ্ছে। আবার যদি একটি চামড়ার দর যদি দরকষাকষিতে ৪শত টাকা হয় সেখানেও তারা ৫০ টাকা কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কারন পুজি সল্পতার কারনে চামড়া কেনার পাশাপাশি তা সরবরাহ করে লবন দিয়ে রাখার ব্যয়ের বিষয়টিও হিসেব করতে হচ্ছে।

তারা আরো বলেন, একটি চামড়া যদি সাড়ে ৩ শত টাকায় কেনা হয়, তাহলে সেটিকে লবন দিয়ে প্রসেসিং করে রাখতে শ্রমিক খরচসহ আরো ৩ শত টাকা খরচ হচ্ছে। তারপর পরিবহন খরচ দিয়ে ট্যানারিতে পাঠিয়ে সে দর পাবো কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!