মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। আর এর জন্য মুক্তিযুদ্ধের চর্চা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও মুক্তিযোদ্ধা চিত্ত হালদারের ৪৩তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে, বুধবার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত স্মরণে মননে শীর্ষক আলোচনা সভায় শিল্পীর জীবন ও কর্ম তুলে ধরে বক্তারা এই আহবান জানান।
এ সময় বক্তারা বলেন চিত্ত হালদার শুধুমাত্র একজন গুণী শিল্পীই ছিলেন না তিনি দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে তৎকালীন সময়ে যুবসংঘের সাথে নিজস্ব মেধা খাটিয়ে তৈরী করেছেন মলোটভ ককটেল, হ্যান্ড গ্রেনেড, রকেট লাঞ্চার – যা সেই সময়ে খুলনার গল্লামারি সহ মুক্তিযুদ্ধের প্রতিরোধী যুদ্ধে দারুণ কাজে লেগেছিল। বক্তারা এই শিল্পীর জীবন কর্ম সবার মাঝে ছরিয়ে দেয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গবেষক ও চিত্রশিল্পী ড. কাজী মোজাম্মেল হোসেন বলেন ‘আমার ছবি আকার অনুপ্রেরণা এই শিল্পীর কাছ থেকেই পাই। এই বরিশালে এই ধরনের শিল্পী থাকলেও আজ পর্যন্ত এখানে একটি চারুকলা কলেজ, বা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিষয়ক কোন ফ্যাকাল্টি হয়নি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। এই শিল্পীর প্রতি আমার অন্ত:স্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাংবাদিক মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন এই শিল্পীকে আমি চিনি স্বাধীনতার আগে থেকেই আমার সাথে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহম্মেদ বীর প্রতীক বলেন, গাবখান যুদ্ধে শহীদ মনোরঞ্জন, স্বরুপকাঠীর হাবিব আজো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে নি, অথচ অনেক অমুক্তিযোদ্ধাই এখন মুক্তিযোদ্ধা সেজেছে, নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে কে প্রকৃত যুদ্ধ করেছে। আমি চিত্ত হালদারকে কাছ থেকে দেখেছি। তার তৈরী বোমা,মলোটভ ককটেল দেখেছি। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন শিল্পীর জীবন ও কর্ম বাচিয়ে রাখতে মুক্তিযোদ্ধাও সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করে সুজয় সেনগুপ্ত।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার ও চারুকলা বরিশাল এর সদস্য আবদুস সোবাহান বাচ্চু শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন। এর আগে বরিশাল সাহেবের গোরস্তানে প্রয়াত শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায় বরিশাল বিপোর্টার্স ইউনিটি, চারুকলা বরিশাল ও প্রয়াত শিল্পীর পরিবারের সদস্য বৃন্দ।