নরওয়ে থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলা পত্রিকা ‘সাময়িকী’ চলতি মাসের গত ৯ তারিখে ‘একাত্তরে শরণার্থীদের আহার যোগাতে মঞ্চে অভিনয় করতেন শিল্পী মমতাজ বেগম‘ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসে সাময়িকী পত্রিকার।
তাৎক্ষণিকভাবে শিল্পীর জন্য সাময়িকী পরিবারের পক্ষ থেকে ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের প্রতি অবদান রাখা মহান এই শিল্পীকে সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
সাময়িকী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ভায়লেট হালদার জানান, অভিনয় শিল্পী মমতাজ বেগম যেন কারো কাছে হাত না পাতে, সেইজন্য সাময়িকী পত্রিকার পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র কর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে শিল্পীকে এই সামান্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
অভিনয় শিল্পী মমতাজ বেগম সাময়িকীকে জানান, তিনি এই অর্থ দিয়ে মুরগি পালনের জন্য ক্ষুদ্র আকারে একটি খামার গড়ে তুলবেন। অভিনয় শিল্পী মমতাজ বেগম সাময়িকী পত্রিকা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে অসচ্ছল সংস্কৃতি শিল্পীর তালিকায় যাতে অভিনয় শিল্পী মমতাজ বেগম‘এর নাম আসে সেই ব্যবস্থা করা হবে।এবং অভিনয় শিল্পীকে যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ অভিনয় শিল্পী মমতাজ বেগম ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পরিবারের সঙ্গে ভারতের বালুরঘাটে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে সেখানেও করেছিলেন অভিনয়, দেশের সেবার জন্য।
বালুরঘাটে তৎকালীন সময়ে পুলিশে কর্মরত সাংস্কৃতিক কর্মী সুবল সরকার‘এর সহযোগিতায় বালুরঘাট, কোলকাতা, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছেন শরণার্থী খাদ্য সংগ্রহের জন্য।
তৎকালীন সময়ে নাটোর জেলার সাড়াজাগানো অভিনেতা সাকাম সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক গেদু, অলক মৈত্র, পুতুল রায়, অনিমা দে টুনি, অনিতা পাল, গীতা রায়, নাজমুল হক লালা সহ আরো অনেকের সঙ্গে করেছেন মঞ্চনাটকে অভিনয়।
বালুরঘাটে “কিছু খেতে দাও” নাটকে একই মঞ্চে অভিনয় করেছেন তৎকালীন সময়ের সাড়া জাগানো নন্দিত চিত্রনায়িকা কবরি, বিশিষ্ট অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে “মা যদি মন্দ হয়” নাটকে।এছাড়াও কমেডিয়ান মতি, টেলিসামাদ সহ সেরা অনেক অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে একই মঞ্চে অভিনয় করেছেন।