মায়ের মতো কেউ ভালবাসে না, এ কথা সকলেই জানেন। মায়ের মতন আত্মবলিদান কেউ করবেন না এ কথাও জানা। তবে কতটা বলিদান দিতে পারেন একটা মা? মা হিসেবে নিজের পুরো পরিচয়টাই বলি দিয়ে দিয়েছিলেন মিশরের সিসা।
স্বামী মারা গিয়েছিলেন একেবারে অল্প বয়সে। তখন তাঁর কোলে দুধের শিশু। তাদের রেখে জীবন কাটানোর কথা ভাবতেও পারেননি সিসা। অথচ মিশরীয় জীবনযাত্রায় একা একটি মেয়ে সব কিছু একাহাতে সামলাতে পারে না, এমনটাই ধারণা ছিল সমাজের।
এই জন্য নিজের পরিচয়টাই বদলে ফেলেছিলেন তিনি। প্রতিবেশীরা তাঁকে চিনত এখজন পুরুষ মানুষ হিসেবে। পুরুষদের মতোই মাথায় বাঁধতেন পাগড়ি। পরতেন ঢিলেঢালা জোব্বা। নারী শরীরের সাজ এবং যাবতীয় অনুষঙ্গ ত্যাগ করে একেবারে পুরুষমানুষ হয়েই দিনগুজরান করতে থাকলেন ছেলেমেয়েকে নিয়ে।
সিসা বলেন, ‘সমাজ আমাকে বাধ্য করেছে এ কাজ করতে। আমাদের সমাজে একজন মেয়ের ক্ষমতা থাকলেও সে পুরুষদের কাজ করতে পারে না। কিন্তু আমাকে, আমার মেয়েকে কে দেখবে? তাই আমি পুরুষ সেজে কাজ শুরু করলাম।’
এ ভাবে থাকতে কেমন লাগত সিসার? সে প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘প্রথম প্রথম পুরুষ সাজতে আমার ভীষণ কষ্ট হতো। কিন্তু সন্তানের কথা ভেবে সব কিছু মেনে নিয়েছি।’
পরিবার তাঁকে দ্বিতীয় বার বিয়ে করার কথা বলেছিল বহুবার। কিন্তু ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে ওই সব কথায় কান না দিয়ে পুরুষের সাজে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন সিসা।
বর্তমানে সিসার বয়স ৮৫। তাঁর এই গোপন সত্য প্রকাশিত হবার পরে মিশর সরকায তাঁকে ভূষিত করেছে ‘দেশের সেরা মা’ সম্মানে। পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়াতেও ভীষণ ভাবে চর্চিত হচ্ছেন তিনি।