বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের দাবি না মানায় এবং হামলকারীদের গ্রেফতার না-করায় বরিশালের রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে ১৭ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করার পর তাদের সাথে একত্মতা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকেও আন্তজেলা ও দুরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
এতে করে এ রিপোর্ট পর্যন্ত গোটা বরিশাল জেলার সাথে আশপাশের ও দুরের জেলার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে ঈদের প্র্ক্কাালে এতে লকডাউন শিথিলের পর যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তি ও বিপাকে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
নগরের রুপাতলীস্থ বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি কাওসার হোসেন শিপন জানান, বৃহষ্পতিবার সকালে বাস শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ হামলার পর শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে হামলাকারীদের গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশাসনের দেয়া আশ্বাসে শ্রমিকরা আল্টিমেটাম দিয়ে প্রায় ৪ ঘন্টা পরে বাস চলাচল শুরু করে।
তবে শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় এবং শ্রমিকদের দাবি না মানায়, তারা সকাল থেকে পুনরায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০ টার দিকে টার্মিনালের সামনের সড়কে বাস আড়াআড়ি রেখে শ্রমিকরা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে নগরের সাগরদী, রুপাতলী ও কালিজিরা এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে রুপাতলী বাস মালিক ও শ্রমিকদের সাথে একত্মতা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে আন্তজেলা ও দুরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে।
তিনি শুক্রবার বেলা ১১ টায় বলেন, রুপাতলী বাস টার্মিনালের এবং নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের মালিক ও শ্রমিক একই প্রাণ। তাদের ওপর হামলা হয়েছে কিন্তু মামলার পরও হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সেখানকার শ্রমিকরা যেহেতু তাদের দাবি আদায়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের এখান থেকেও আন্তজেলা অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ১৪ টিসহ দুরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে বরিশালের সাথে অন্য জেলার বাস যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের দুটি কমিটি নতুনভাবে গঠিত হয়। যার একটির সভাপতি সাবেক শ্রমিক নেতা সুলতান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম টিটু। অপর কমিটির সভাপতি বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ শাহারিয়ার বাবু।
সাধারণ শ্রমিকরা জানিয়েছেন,এ কমিটি দুটি গঠনের পর থেকেই শ্রমিক নেতাদের মাঝে বিভিন্ন সময়ে ছোটখাটো মারামারি ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।
বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে টার্মিনাল ভবনের নীচতলায় কাউন্টারের সামনে দুই গ্রুপ শ্রমিকদের সাথে সংঘর্র্ষের ঘটনা ঘটে। এরপরপরই গোটা বাস টার্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে পরিমল চন্দ্র দাস ও আহম্মদ শাহারিয়ার বাবু নেতৃত্বাধীন কমিটির নেতারা জানিয়েছেন তাদের মালিক ও শ্রমিকদের ওপর সুলতান মাহমুদের লোকজন হামলা চালিয়েছে। আর সুলতান মাহমুদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যদিও বৃহষ্পতিবারই জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু বাদী হয়ে তাদের শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় অপর কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম। ওসি বলেছেন মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।