আজ বরিশাল বিভাগে করোনা ও উপসর্গে সর্বোচ্চ বাইশ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রীমা কর্মকার, করোনা উপসর্গ নিয়ে রবিবার রাতে ভর্তি হলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাই প্লো ন্যাজেল ক্যানুলা পান নি। তাকে করোনা আইসোলেশন ইউনিটের পঞ্চম তলায় ভর্তি করা হয়েছে যেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন এর কাজ চলছে।
তার স্বজন পংকজ কুমার গুপ্ত জানান, তার অক্সিজেন লেভেল উনচল্লিশে নেমে গেলেও দীর্ঘ বারো ঘন্টায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দেয়া যায়নি। কর্তব্যরত এক নার্স জানান হাই ফ্লো দিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন দরকার। ইতোমধ্যে তা সকল রোগীকে দেয়া হয়েছে। একটিও খালি নেই। এ ছাড়া আই সি ইউ এর বাইশ টি বেড পরিপূর্ণ হয়েগেছে। শুধু রীমা নয় করোনা আইসোলেশন ইউনিটের অন্তত অর্ধেক রোগী রয়েছেন যাদের এই মুহুর্তে হাই ফ্লো অক্সিজেন দরকার- কিন্তু সব মিলিয়ে প্রয়োজনের অর্ধেকও মিলছে না। আর তাই হঠাৎ করে আইসোলেশনে মৃত্যুর সংখা অনেক বেড়ে গেছে।
গত সোমবার করোনা আইসোলেশনে করোনা রোগী মারা না গেলেও যে সব রোগী ভর্তি হয়েছে তার উনিশ জন করোনা উপসর্গে মারা গেছে।
হঠাৎ করো আইসোলেশনে আসা রোগীরা চিকিৎসা র শুরুতেই মৃত্যুবরণ করছে। এই ওয়ার্ডে কর্মরত একজন ওয়ার্ড মাস্টার জানান এখানে ভর্তি হওয়া রোগীর অধিকাংশ আসছে গ্রাম অঞ্চল থেকে, আগেই তাদের অবস্থা’ সিভিয়ার ’কন্ডিশনে ছিল ফলে তাদের বাচানো যাচ্ছে না।
সোমবার দুপুর সাড়ে বারাটায় হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডটি ঘুরে দেখার সময় হঠাৎ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাহিরে আসলে রোগীর স্বজনরা ব্যস্ত হয়ে দ্রুত লাইনে দাড়ালে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে অধিকাংশ সিলিন্ডার বিতরণ হয়ে যায়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা জানান, কখন অক্সিজেন বন্ধ হয়ে যায় তাদের সারাক্ষণ এই আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। অনেক সময় সিলিন্ডারে অক্সিজেন আসতে দেরী হচ্ছে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও করোনা আইসোলেশন ইউনিটের ইনচার্জ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, একবারে শেষ পর্যায়ে রোগীরা আসছে, এমনকি তারা টেস্টও করাচ্ছে না। এর ফলে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে বরিশাল বিভাগে ১২৬৫ জনের মধ্যে পজেটিভ হয়েছে ৫৭৫ জন। আক্রান্তের হার ৪৫. ৪৭ শতাংশ।
করোনায় এই নিয়ে বিভাগে ৩৫২ জন মারা গেছে। মোট আক্রান্ত ২২৬৮৪ জন।
বরিশাল শের- ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে তিনশো বেডের মধ্যে রোগী রয়েছে তিনশো সাতজন। কম গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরামর্শ দিয়েছে।
হাসপাতাল পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান বর্তমানে এই করোনা ওয়ার্ডে রোগী উপচে পরছে। আমরা সিভিয়ার ছাড়া রোগীদের বাসায় বসে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিচ্ছি। পরিস্থিতি সংকট পূর্ণ। আরো কিছু আইসিইউ এর জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।
করোনা অ্ইসোলোসন ইউনিট সূত্রে জানা যায় এ পর্যন্ত ৮৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এর মধ্যে করোনা ওয়ার্ডে ২৩১ জন।