বৃষ্টির গান
নদীর পাশে হাঁটতে হাঁটতে
অদেখা স্বপ্নের হাত ধরি
বৃষ্টির গানে –
স্বপ্নেরা প্রজাপতি হয়
মেঘপুরুষের উদাত্ত ডাকে –
বেজে ওঠে রিমঝিম নুপুর ,
ষোড়শী বৃষ্টির চঞ্চল বাজুবন্ধ ।
দুটি প্রান এক হতে চায়
স্ফটিকময় সজীব ক্ষণে
হৃদয়ের ফুটি ফাটা প্রান্তরে –
মেঘপুরুষের প্রার্থনা হয়ে
নেমে আসছে স্নিগ্ধ ধারা ।
রূপকথা
আমার বৃষ্টি জন্মের কথা
লেখ তোমার ওই মেঘ পালকে ।
জন্মান্তরের আমি
মিশে যাবো বৃষ্টি আবেশে
সেই হলুদ পাখির সোনালি ডানায় ।
তোমার মেঘলা চোখে বিদ্যুৎ আকাশ
সার্সির কাঁচে রিমঝিম উচ্ছ্বাস
পথ হারানোর সন্ধিক্ষণে
তোমার মেঘলা হাতে দিলাম
আমার বৃষ্টি জন্মের রূপকথা।
বৃষ্টিবিন্দুরা
তোমার আমার মাঝে বৃষ্টিবিন্দুরা
এক নীরব স্তবমন্ত্রের প্রতীক্ষায় ,
রাত আসে ছদ্ম আবেশে ,
নিস্তব্ধতার আঁচলে মুখ ঢেকে ।
শব্দহীনতার মাঝে শব্দেরা জেগে ওঠে
টুপটাপ বৃষ্টি ফোঁটায় ,
তোমার আমার একান্ত সোহাগী শব্দরা
মুখোশের মায়া ছিড়ে নিজেদের রনিত করে ।
শস্য জড়ানো শ্রাবন
বৃষ্টি আশায় অযুত আয়ুর মালা গাঁথে ।
তোমার দু–চোখে মেঘলা ধানের ছায়া –
মরু চাতকের মতো আমি বসে থাকি ,
আমার নিজস্ব বৃষ্টিবিন্দুরা
আজ মুখরতার মাঝে একান্তে শান্ত স্তব্ধ…
বেঁচে থাকা
অনেক মাঠ পেরিয়ে একটা টিলার উপরে
একটু সবুজ ঘাস দেখার আশায়
তপস্যার স্তব্ধতায় দিন কাটাই ।
আমার মেয়েজন্মের প্রতিটি দিন
প্রজাপতি হতে গিয়ে
ডানায় মুছে যায় প্রতিটি আশার রং ।
বেঁচে থাকা – অভ্যাসের খেলায়
মগ্ন হতে পারি না কিছুতেই ,
অবিরত বৃষ্টি ঝরে
সুড়ঙ্গের অন্ধকারে
ভিজে সিগারেট
সিগারেটটা নিভে গেছে
লাইটারটাও জ্বললো না
বর্ষা বড় উত্তাপহীন স্যাঁতস্যাঁতে –
ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ইতস্তত চোখ
একহাত দূরে ফি পার্কিং জোনে
থামলো একটা মেরুন স্করপিও
নেমে এল সুঠাম শ্যামল পুরুষ ।
বর্ষায় আসে বন্য বাঁধভাঙা প্লাবণ
হৃদয়ের একূল ওকুল দুকূল ভেসে যায় ।
অন্ধকার বাইপাসে ছুটে চলে
দুরন্ত স্করপিও
হাতে হাত দুটি আদিম শরীর …
প্রথম আলো
অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে
পাকদণ্ডীর বাঁকে
আমি চেয়েছিলাম বিশ্বস্ত হতে
তোমার আমার নিজস্ব অর্কিডের
বেগুনি আভায় –
আকাশের কাছাকাছি থেকেও
মাটির সবুজ মখমলি চাদরে
রোদের ছোঁয়ায় গুপ্তধন খোঁজে
মেঘময় ঋদ্ধ মনন –
উৎসে জাগে সত্যের প্রথম আলো …