আপত্তিকর কনটেন্টগুলো সরিয়ে ফেলতে ফেসবুক ও টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। এসব বিষয়ে বিটিআরসিকে তারা যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে।
ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে যে এভাবে নারী পাচার কার্যক্রম চলছে, তা বুঝতে আমাদের দেরি হয়ে গেছে। আমরা মনে করেছিলাম এসব মজার অ্যাপস সারা দুনিয়ায় চলছে। এখানেও সেই ভাবেই চলছে। কিন্তু পরে দেখলাম তরুণদের একটা গ্রুপ সংগঠিত হয়ে অপরাধ করছে এসব অ্যাপস ব্যবহার করে।এখন আমরা চেষ্টা করছি। শুক্রবারও (৯ জুলাই) এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি অবশ্যই দেশের গণমাধ্যম, অভিভাবক এবং বিশেষ করে কিশোরী-তরুণীদের সচেতন হতে তথ্য অনুযায়ী এই গ্রুপটা গত ৫ বছরে ৫০০ মেয়েকে পাচার করেছে। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছর। গত ৮ বছরে তারা ১ হাজার নারীকে পাচার করেছে। মে মাসের শেষে ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও দু’দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে রীতিমত ঝাঁকুনি দিয়ে যায়। এরপর টিকটকের ফাঁদে ফেলে তরুণীদের ভারতে পাচার সংক্রান্ত একটি ভয়াবহ খবর গণমাধ্যমে আসার পর সবাই বিষয়টি জানতে পারে।
জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, ফিরে আসা মেয়েদের বিষয়ে তিনি কাজ করছেন। তিনি বলেন, অপরাধী চক্র অনেক বেশি দক্ষ। আমাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সেই পরিমাণ দক্ষতা আছে কিনা, তাও ভাবতে হবে। কারণ অন্য দেশে আটককৃতদের বিচার শুরু হবে। সেই বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে। এরপর ফেরত আসবে এবং এখানে চার্জশিট দেওয়া হবে। এটা অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং চ্যালেঞ্জটা এখানেই।
ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে টিকটক ও লাইকি কাজে লাগিয়ে কী কী করা হয়? কীভাবে তারকা হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের ফাঁদে ফেলা হয়। লাইকি ও টিকটকের জন্য খুব সামান্য সেটআপ ও দক্ষতার দরকার হয়। তাই স্বল্প শিক্ষিত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা খুব সহজেই সাইবার-বিনোদন জগতে প্রবেশ করতে পারে। শুধু একটি স্মার্ট ফোন আর ইন্টারনেট কানেকশন লাগে। এছাড়া এখানে একাউন্ট খুলতে গেলেও তেমন কোনকিছুর প্রয়োজন হয় না। টিকটকের রিপোর্টিং সিস্টেমে অশ্লীল বিষয়কে আলাদা করে দেখানো হয় না বলে যে যা খুশি আপলোড করতে পারে।