প্রতিটি মানুষের মধ্যেই থাকে দুটি করে সত্তা
প্রতিটি মানুষের মধ্যে থাকে দুটো করে অস্তিত্ব। আমরা একজন মানুষকে বাইরে থেকে দেখে ঠিক বিচার করতে পারি না, নিজের মতো করে বিচার করাও ঠিক নয়। কারণ প্রতিটি মানুষের মধ্যেই থাকে দুটি করে সত্তা বা অস্তিত্ব।
এক – তার নিজস্ব সত্তা, সে আসলে ঠিক যেরকম।
দুই – আর একটি সত্তা হলো, সমাজের কাছে সে নিজেকে যেভাবে তুলে ধরতে চায়। তাই চট করে কোনও মানুষ সম্পর্কে ধারণা করে নেওয়া ঠিক নয়।
একজন মানুষের প্রকৃতি ঠিক কী রকম, তা চট করে বোঝা যায় না। তাই বাইরে থেকে দেখে বা দু চারদিন কথা বলে নিজের মতো করে তার সম্পর্কে ভেবে ফেলাটা কিন্তু ভীষণরকম বোকামি। তার সাথে বন্ধুত্ব করার আগে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করাটাও তাই ভীষণ রকম জরুরি।
কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার আগে সে অন্যের জন্য কতটা ত্যগ স্বীকার করতে পারে, তা দেখে নেওয়া খুব প্রয়োজন। যে মানুষ নিজেকে ছাড়া অন্য কারো উপকারে আসে না, তার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকাই ভালো। এরা কিন্তু মানুষ হিসেবে খুব স্বার্থপর এবং এই ধরনের মানুষেরা কখনোই ভালো বন্ধু হতে পারে না। এদের অহংকার খুব বেশি হয়।
বন্ধু নির্বাচনের আগে তাই দেখে নেওয়া দরকার যে ভালো আর খারাপের মধ্যে সে ব্যক্তি পার্থক্য করতে পারছে কি না। যে খারাপ-ভালোর তফাত্ করতে পারে না, তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা ক্ষতিকর।
আরো একটা বিষয় হল, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে তার আশেপাশের মানুষরা কেমন ধারণা পোষণ করেন, তার অন্য ঘনিষ্ঠ লোকজন যদি তার আড়ালেও তার সম্পর্কে ভালো কথা বলেন, তাহলে বুঝতে হবে সেই মানুষটি সত্যি ভালো। এর পাশাপাশি ওই ব্যক্তি নিজের কাছের মানুষদের সম্পর্কে তাদের আড়ালে কেমন কথা বলে, সেটাও বিবেচ্য। যদি ঘনিষ্ঠ কারো সম্পর্কে তার আড়ালে কোনও ব্যক্তি নিন্দে করে, তাহলে সেই ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কে মনে সন্দেহ জাগে।
বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল করতে হবে সেই ব্যক্তির ধ্যান-ধারণা। যে মানুষ নিজের সুবিধা চরিতার্থ করতে অতিরিক্ত মিথ্যে কথা বলে না, নিজের জ্ঞান ও নিজের চেহারা নিয়ে গর্ব প্রকাশ করে না এবং অন্যের মতামতকে মূল্য দেয়, সেই হল সবার চেয়ে সেরা।
যে কোনও কারোর সঙ্গে বন্ধুত্ব না করাই শ্রেয়। কারণ প্রকৃত বন্ধু হলো বইয়ের মতো, যে পাশে থাকলেই মন ভাল হয়ে যায়। যার উপস্থিতি বলে দেয় আমার কেউ একজন আছে।
(চলবে)