নাটোরে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাদের। এনিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০ জনে। এছাড়া গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় করোনার কোন নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
এদিকে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে, দিন দিন খারাপ হচ্ছে নাটোরের পরিস্থিতি। দেশের অন্যান্য জেলায় ছুটির দিনেও করোনা পরীক্ষা অব্যাহত থাকলেও নাটোরের ব্যাতিক্রম বলে মনে করছেন সচেতন সমাজ। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একজন ক্যারেসমেটিক লিডার দরকার ছিলো, কিন্তু….করোনা চিকিৎসার বেসিক অক্সিজেন ও আই সি ইউ বেড দুইটার কোনটাই করা সম্ভব হয়নাই সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দেওয়া সত্বেও।
এমনি শত শত মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন করোণা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে যে কোন সময় মহামারী রূপ ধারণ করতে পারে। তখন সকল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
নাটোর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, আমাদের রয়েছে প্রচুর লোকবল সংকট। যা রয়েছে তা দিয়ে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দিতেই আমরা ব্যস্ত রয়েছি। এছাড়া নাটোরে কোন ধরনের হেলথ ইন্সটিটিউট নেই কোন ন্যাশনাল নার্সিং ইনস্টিটিউট নেই , কোন ধরনের হেলথ বিষয়ে কোন ডিপ্লোমার প্রতিষ্ঠান নেই।
আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই যা সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠান ছাত্রদেরকে এই বিপদের দিনে আমরা কাজে লাগাতে পারি। নওগাঁ জয়পুরহাটসহ আমাদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলাতে এসমস্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এবং এই সমস্ত মেডিকেল ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনী ছাত্রদেরকে ল্যাবে ব্যবহার করা যায়।
আগামী সপ্তাহ থেকে আমাদের ছুটির দিনেও নমুনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা শুরু করতে পারব ইনশাল্লাহ। যেহেতু বিনা পয়সায় করনা পরীক্ষার বুথ চালু হচ্ছে সেহেতু আগামী সপ্তাহ থেকে ছুটির দিনেও যাতে নমুনা পরীক্ষা হয় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব বলে আশ্বাস প্রদান করেন। পাশাপাশি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর এ আবেদন করেছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু হওয়া সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনেও নাটোর শহর সহ অধিকাংশ এলাকার সড়কগুলো ফাঁকা। নিত্য পণ্যের দোকান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে বিপনী বিতান সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভারি যানবাহন।
বিধিনিষেধ কার্যকর করতে নাটোরের প্রবেশ পথে চেকপোষ্টসহ কঠোর অবস্থান নিয়েছে সেনা-বিজিবি ও র্যাব সহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রনে জেলা প্রশাসনের একধিক মোবাইল টিম মাঠে রয়েছেন। গতকাল জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় ৪২ ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে।
৪২ মামলায় ৪২ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। এছাড়া নাটোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮৩জন রোগী ভর্তি রয়েছে।