কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় আরও দুটি ক্যাথলিক গির্জা আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির কর্মকর্তারা অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনাকে ‘সন্দেহজনক’ হিসাবে বিবেচনা করছেন।
গত স্থানীয় সময় শনিবার এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট চারটি গির্জা পুড়ে ছাই হলো।
গতকাল রবিবার (২৭ জুন) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার আরো দুইটি গির্জায় আগুন লেগেছিল। শনিবারের ঘটনাসহ এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি গির্জা পুড়ে ছাই হলো।
মাত্র ঘন্টাখানেকের ব্যবধানে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় সেইন্ট অ্যান’স ও চোপাকা নামের ওই দুটি ক্যাথলিক গির্জা অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের সোমবার কানাডায় জাতীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠী দিবস উদ্যাপনের দিনও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় আরও দুটি ক্যাথলিক গির্জা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল।
রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) সার্জেন্ট জেসন বেইদা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগের অগ্নিকাণ্ডগুলোর পাশাপাশি নতুন দুই অগ্নিকাণ্ডেরও তদন্ত চলছে, এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি বা কেউ গ্রেফতার হয়নি।
এর আগে, কানাডার আদিবাসী অধিকার সংস্থা দ্য ফেডারেশন অব সোভারিজিন ইন্ডিজেনাস নেশনস জানিয়েছিল, সাসকাচুয়ান রাজ্যের ম্যারিভাল ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল সংলগ্ন এলাকায় গণকবরগুলোর সন্ধান পাওয়া গেছে। ঠিক কতসংখ্যক গণকবর সেখানে রয়েছে- সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য অবশ্য জানা যায়নি। তবে বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘কানাডার ইতিহাসে এর আগে এত উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
গত মে মাসেও আরেকটি স্কুল প্রাঙ্গনে গণকবর পাওয়া যায়। এসব স্কুল পরিচালনা করতো গির্জা। আবাসিক পদ্ধতিতে পরিচালিত এই স্কুলগুলো ১৮৩১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। এরপর এই স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে সেই ঘটনায় ক্ষমা চাইতে খ্রিষ্টান ধর্মযাজক পোপ ফ্রান্সিসকে কানাডায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অটোয়াতে সাংবাদিকদের জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আমি পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি কথা বলেছি যেন তিনি ক্ষমা চান। আর এটা তার জন্য কেবল গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং কানাডার মাটিতে আদিবাসী কানাডিয়ানদের কাছেও ক্ষমা চাওয়া।
উল্লেখ্য, কানাডায় উনিশ ও বিশ শতকে আবাসিক বিদ্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হতো এমন দুটি এলাকায় কয়েকশ’ অচিহ্নিত গণ কবর আবিষ্কারের পর সৃষ্ট উদ্বেগের মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি ক্যাথলিক গির্জায় এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।