বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বৃহৎ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেও এর পরিবেশ এর ভয়াবহা চিত্র দেখা গেছে। হাসপাতালের সামগ্রিক পরিবেশ ভেঙে পড়ছে বলে মনে করছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও বিভাগীয় প্রশাসন।
হাসপাতাল ভবন পরিদর্শন করে দেখা যায় হাসপাতালের তৃতীয় তলা থেকে শুরু করে অধিকাংশ ওয়ার্ডে পানীয় জলের সুবিধা নেই। এমনকি অধিকাংশ টয়লেট এ পানি নেই। অপরিচ্ছন্ন
টয়লেট থেকে শুরু করে নোংরা আবর্জনায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের প্লাষ্টার খুলে পড়ছে। বিদ্যুতের লাইনের সমস্যা।
এদিকে লকডাউনের খবর শুনে বাড়তি অন্তত আরোও হাজার মানুষ আজ হাসপাতালের প্রধান আউটডোরে ভীড় করে। কর্তব্যরত ডাক্তাররা জানায় প্রতিদিন আউটডোরে আটশো থেকে বারোশো রোগী থাকলেও এর সংখ্যা এখন রবিবারে দুই হাজারে পৌছেছে।
এদিকে হাসপাতাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বাদল।
তিনি জানান হাসপাতালের পরিবেশ দেখে ভর্তি হতে না পেরে আমার এক পরিচিতকে সার্কিট হাউসে এনে রেখেছি। দয়া করে হাসপাতালের নেংরার পরিবেশ ঠিক করুন। এ ছাড়া কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটি বলুন। তিনি গতকাল শনিবার কোভিড নিয়ে এক ভারচ্যুয়াল আলোচনা সভায় এ আহবান জানান। এসময় অধিকাংশ বক্তা বরিশাল শের-ই বাংলা হাসপাতালটি রোগী বান্ধব করার জন্য হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালণক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, আমি আজ তিন তলায় পরিদর্শনে এস দেখছি এখানে কোন পানি নেই। তিনি জানান হাসপাতালের বেহাল অবস্থা থাকলেও গণপূর্ত অধিদপ্তর কোন গা করছে না। এর ফলে কোন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। বর্তমানে হাসপাতালের অধিকাংশ ওয়ার্ডে পানি নেই, বিদ্যুৎ এর অবস্থা খারাপ সরবরাহ লাইনের কারনে, লোড নিতে পারছে না। দুইটা লিফট আসলেও সেটি লাগানো হচ্ছে না। করোনা ওয়ার্ডের সিড়ি ভাঙ্গা, সেখানে আলাদা সাবষ্টেশন হয়নি, সে কারণে এসির লোড নিতে পারছে না।
এক বহুমাত্রিক সমস্যায় দক্ষিণাঞ্চল এর প্রধান হাসপাতালটি জর্জরিত হলেও এটি সমাধানে কোন কিছুই হচ্ছে না’
শনিবার বিকেলে বরিশাল ক্লাবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক সভায় বরিশালের সিটি মেয়র শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্য সচিব বরিশালের সন্তান তিনি যা প্রয়োজন সেটি দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করছেন-তার পরেও কোন কাজ হচ্ছে না।
এদিকে হাপসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগী জানান, এই হাসপাতালের লিফট গুলি মাঝে মাঝে বিকল হয়ে পরছে। এসি অধিকাংশ নষ্ট। পানি নেই, এমনকি চারিদেকে নোংরা হলেও পরিস্কার করা হয় না।
করোরা ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগী জানান এখানে বেসিন, টয়লেট নোংরা, সিড়ি ভাঙা, প্রতিদিন মেঝে পরিস্কার করা হয়না।
হাসপাতালের পরিচালক জানান এখানে চাহিদার তুলনায় লোকবল চারভাগের এক ভাগ। করোনা ওয়ার্ডের দেড়শো সিটের জন্য আলাদা লোকবলের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এরফলে বাইরে থেকে লোক এনে কাজ করাতে হচ্ছে। যদি পর্যাপ্ত লোকবল না দেয়া হয় চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে।
হাসপাতালের পানি ও বিদ্যুত ও অন্যান্য সুবিধার অপর্যাপ্ততার বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অলিভার গুদা জানান, পানি সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। অনান্য সকল কাজের বাজেট পাওয়া গেলে এটি করা সম্ভব হতে পারে। বিগত অর্থবছরে বাজেট থেকে দেড় কোটি টাকা কর্তন করে নেয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।