বিপন্ন অস্তিত্বের নিবন্ধ
প্রচ্ছন্ন অক্ষরে লিখি অন্ধকার ভারতের কথা
সহনশীলতা সংকেত পাঠায় পরকালের
দুঃস্বপ্নের ভিতর অবিশ্বাস দাঁত খিঁচোয়
সর্বক্ষণ পাহারা দেয় অসহায়
কলঙ্কের চুম্বন মেখে নিই সহিষ্ণু রোদে
অদ্ভুত বিশ্রামে দুলে ওঠে সত্যের পর্যটন
ভেসে ভেসে আসে আস্ফালন
মেঘেরা দরজা খুলে পালায়
বিপন্নতা সাজিয়ে দেয় কলঙ্কের বাসর
ভয় তাড়া করে
মৃত্যুর উপকন্ঠে অপার্থিব্য কর্তব্য অঙ্গহীন ভারতবর্ষের গান করে
আমরা নেচে উঠি
আমাদের অস্তিত্ব গুলো এভাবেই বিপন্ন হয় প্রতিদিন
এখন ও রোদ খেলা করে
স্যাঁতস্যেঁতে উঠোনে
খেলা করে মেঘ ভর্তি রোদ
পড়ন্ত বেলার ভাত
পেটের ভিতর জ্বলছে উনুন
দাদু বলতেন” ভাত মজা না ভাত মজা”
পুঁইশাক দিয়ে এঁটে চচ্চড়ি
বাসি ডাল হেজে যাওয়া গন্ধ নাকে পর্যটনে মগ্ন
মরা ডালে কাকেরা সভা করে
দুটাকা দরের রেশনের চাল
পুঁইশাকের ঝোলে ভাতেরা কই মাছ হয় পর্বত জয় করে
কাঁচা লঙ্কা মেখে তৃপ্তির চুমু দিই
ছাপোষা সংসার ডানা ঝাপটায়
বি পি এল লিষ্টে নাম দেয়নি নেম্বারে
কেমন করে জেনে গেছে ভোট পড়েনি ওর বাক্সে
পোয়াতি বউ এর মুখটা বড্ড করুন
ভেবেছিল এবার হয়তো একটা ঘর হবে
লালিত স্বপ্নের মোহময় শিমুল ফুল পড়ে আছে ফুটপাতে
আকাশের গায়ে কারা যেন ছিটিয়ে দিয়েছে নুন
সীমানা পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের বসে আসর
কাজ হারানোর গান বাজছে ঘরে ঘরে
দেশি কুল দিয়ে চলবে বৌ এর সাদ্ ভক্ষন পর্ব
বড়ো বাড়ির মেয়েরা এখন বাঁধে না চুল
উত্তুঙ্গু যৌবন মেলে ধরে বাতাসে
পার্কের বেঞ্চিতে মেলে ধরে আলিঙ্গন
সভ্যতার বাতাসে ওড়ে ভ্যালেন্টাইনের কবিতা
নিত্য দিন ভাত শূন্য হাঁড়িতে রোদ হাবুডুবু খায়
ছেঁড়া সংসারে খেলা করে মা
কষ্টের ভারতবর্ষে কষ্টের পতাকা ওড়ে
এসেছে ভোটের মরশুম
পাড়ার মোড়ে মোড়ে পতাকায় আঁকা তোলপাড় করা চিত্র কলা
অলিখিত
স্বর্গের পথে ছুটে চলেছে নিরলস ঘোড়া
বিভৎস চিৎকার ভেসে আসছে নরকের বারান্দায়
নাচের তালে তালে ঝরে পড়ছে সর্বনাশ
ঈশ্বর বোধহয় ভুলেই গেছে গরীব বলে একটা মনুষ্য শ্রেণী পৃথিবীতে আছে
ওরা কি খায়,কি পড়ে , তাদের পরিণতি ই বা কি?
ঈশ্বরের পুস্তক গুলো সব মাটিতে লেখা
বৃষ্টির মৃদু ছোঁয়ায় সব গলে গেছে
ধূর্তপন্ডিত মশাই এখন নিজের মতো করে গাইছেন সেই অশুদ্ধ সংলাপ —
বৈরাগ্য
বৈরাগ্য খুঁজে পেয়েছি তাই বৈভব এখন দুয়োরানী
অপেক্ষারা পার হয়ে চলেছে দিন রাত
বিকেলের ম্লান আলোয় বৈরাগ্যের মুখ দেখি আয়নায়
আবেগের শিস ধ্বনিতে মাতোয়ারা পৃথিবী
আয়ুর অঙ্ক কষে কষে হয়রান
দীর্ঘশ্বাস মেখে শব্দেরা কানামাছি খেলে
গোপনে ঝরে যায় রাতের ফুল
ডানে বামে আঁকা তাদের সর্বনাশ
মাথা পেতে ডেকে নিচ্ছি অপেক্ষার ক্রীতদাস কে
আমরা রাজপুত্র হওয়ার অপেক্ষায় করা মন্দিরে রায়
নৈবেদ্য সাজায় বাসি ফুলে
দেবতারা স্বরলিপি লেখে নিষ্ঠুর খাতায়
ব্যর্থ সব আসবাব ধূসর হয়
ইচ্ছেরা লাগাম কষে চাবুক মারে
ধূসর আলোয় ডেকে ওঠে খাঁচার পাখি, বৈরাগ্য মুচকি হাসে
সম্ভ্রম
বিমর্ষ, নিঃসঙ্গ রাত আমায় পাহারা দেয়
নিজে নিজে সেরে নিচ্ছি গোপন পরামর্শ
সত্য কথা বলার মতো স্পর্ধা নেই
মনো বিক্ষণে তুলে নিই উদাসীন বিশ্বাস
বিষন্ন পাহাড়ের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়লাম
চৈতন্য চুরি হয়ে গেল
আমি বিবস্ত্র হই বারবার
সম্ভ্রম নিয়ে আমার কোন হেরিটেজ নেই ।
প্রলাপ
একটা অদ্ভুত সময়ের সেতু নির্মাণ হলো
সর্বনাশের আয়ু হেঁটে চলেছে অনন্তের পথে
অন্ধকারে ডানা মেলছে কষ্টের রূপকথারা
অযৌক্তিক দূরত্বে গুম হয়ে আছি
নিবিড় শূন্যতার কফিনে বন্দী সব আঁধার
মর্মান্তিক চিহ্ন লেগে আছে আমাদের জাগরণে
মর্মান্তিক চাঁদ কুয়াশার সংলাপে মগ্ন
কালো মেঘ আর মনখারাপ পাহারা দিচ্ছে বিবস্ত্র উপত্যকা
প্রসঙ্গ হীন অভিমানে অজস্র অপেক্ষা পড়ে আছে
কার হাতে সঁপে দিবো ভরসা
নড়বড়ে সেতু
শিরদাঁড়া ভেঙে যায় বারবার
মেরামত করছি আবার হাঁটছি
পায়ের তলা থেকে সরে যাচ্ছে মাটি
মৃত্যু কে অনুরোধ করছি নিয়ে পার করে দিতে
বিবস্ত্র বিশ্বাস গুলো ডানায় বেঁধে আছে রং