রাজশাহীর পবা উপজেলা দামকুড়া থানার সামনে মধুপুর বটতলা এলাকায় ঠিকাদারের লোকেরা শতবর্ষী একটি পাইকর গাছ কাটতে গেলে এলাকবাসী বাধা দেয়। গাছটি রক্ষায় জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন স্থানীয় জনতা ।
বুধবার (২৩ জুন) সকালে শতবর্ষী এই ‘পাইকর’ গাছটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের টেন্ডারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স বকুল এন্টারপ্রাইজ কাশিয়াডাঙ্গা হতে কাঁকনহাটে তিলাহারী পর্যন্ত মোট ১৯ টি গাছ দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কাটার টেন্ডার পায়। এসব গাছ কেটে ফেলার তালিকায় মধুপুর বটতলা এলাকায় শতবর্ষী পাইকর গাছটিও রয়েছে।
তবে এলাকাবাসী গাছটি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এ জন্য পবা উপজেলার স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষর সহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি আবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গাছটির বয়স একশ’ বছরের বেশি। এই গাছের নিচে শত শত মানুষ বিশ্রাম করে। এছাড়া হাজারো পাখি এই গাছে বসবাস করে। গাছটি কেটে ফেললে একদিকে যেমন জনগণের বিশ্রামের স্থান নষ্ট হবে। তেমনি পাখি হারাবে তার নিবাস এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
পবা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইাসলাম বলেন, এই গাছ আমার বাবা-দাদার আমলের। আমাদের গ্রাম ও মোড়ের পরিচিতি হিসেবে এই গাছ ব্যবহার হয়। এখানে অনেক পথিক গরমে এবং বৃষ্টিতে আশ্রয় নেয়। একইসঙ্গে অনেক রকমের পাখির বসবাস এই গাছে। তাই কোনোভাবেই এই গাছ কাটতে দেওয়া হবে না।
দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম জানান, গাছটি একদিন কাটতে এসেছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার মুখে তারা ফিরে গেছে।
গাছ কাটার টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বকুল এন্টারপ্রাইজের মালিক বকুল হোসেন বলেন, জেলা পরিষদ থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে কাশিয়াডাঙ্গা হতে কাঁকনহাটে তিলাহারী পর্যন্ত মোট ১৯টি গাছ দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছি। সব টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে গাছ কাটতে পারিনি। এখন গাছ কাটতে গেলে এলাকবাসী বাধা দিচ্ছে। শুনেছি, এ বিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে একটি আবেদন করেছেন।
ঠিকাদার বকুল হোসেন বলেন, গাছের বাজারমূল্য এলাকাবাসী পরিশোধ করলে আমি গাছ কাটবো না। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ঠিকাদার বকুল।