ঈশ্বরের ভিন্ন পথ
দিনভর বৃষ্টির আশায় থেকে
এইমাত্র হয়ে গেলো এক পশলা পাথর বৃষ্টি,
কৃষাণীর জমি নেই
অথচ ফসলের আকালে সে উদাসীন;
পথের বাঁকে এসে পথ হারিয়ে গেলে
আমি অকুণ্ঠ চেয়ে থাকি
ঈশ্বরের পানে…
অথচ ভুলেই যাই যে তাঁহার নিবাস
ভিন্নপথে ভিন্ন কোনোখানে।
আগন্তুক
জানালা খুলে আর কাউকে দেখি না
দেখার ইচ্ছে হয় না,
বসন্ত দাগে ভরে গেছে ওই মুখ
কি ভীষণ বিভৎস!
হৃদয়ের প্রকোষ্ঠে রেখে
যাকে এতোদিন দেখেছি অহর্নিশ
তার সমস্ত অবয়বে ব্যথার মলিনতা
মুছে দিতে কষ্ট
বাড়িয়েছিলাম হাত…
সেই থেকে আমার হাতটি আর নেই,
খঞ্জরে কেটে ঝুলিতে ভরে নিয়ে গেছে
ছদ্মবেশী আগন্তুক!
তোমরা দেখতে পাচ্ছো
তার ফিরতি পথে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ!
চাঁদ আমার প্রেমিক
কোজাগরী চাঁদ নেমে এসেছে আমার আঙিনায়
নিশীথ রাতে ঠোঁটে নিয়ে রুপালী চুম্বন-
এমন চাঁদের রাতে জানালা সব খুলে রেখেছি
ওই আকাশকে রেখে পাহায়ায়
আসুক এবার যতো বোহেমিয়ান বাতাস
আমি তাদের বলে দেবো
‘চাঁদ আমার প্রেমিক’…
এমন গভীর জোসনার রাতে
সেই সদূর হতে ভেসে আসে
রাগ ভৈরবী-শ্যামাঙ্গী দ্রোপদীর কুঞ্চিত চুলের সুগন্ধী
রাজার জলসায় বেহুলার নৃত্যকলা
নুপুরের ছন্দে লুটিয়ে পরে ভোরের রবি—
এমন সময় মনের কার্নিশে ভেসে ওঠে
কার মুখের ছায়াছবি?
চারিদিকে এতো জোসনা আনন্দময়ী গান
তবু কেন ভেসে ওঠে-হৃদ আয়নায় শ্বাপদের মুখ?
প্রেম
প্রেমে আর পড়বো না, এই বলে
যতোবার রাগে ক্ষোভে ছিঁড়েছি মাথার চুল-
ততোবার পতঙ্গের মতো উড়ে এসে জুড়ে বসেছে প্রেম
অতঃপর প্রেম তুলে নিয়েছি হাতের মুঠোয়,
স্পর্শে পেলব মসৃণ এবং আদুরে…
অনুভবে প্রেম প্রতিবার নতুন এবং অমৃত-
বারো হাত দূরে
প্রার্থনায় মন নেই
যতোটা বিলীন হয়ে আছে
মাটি ও বৃক্ষে-
আগাম বর্ষায় গাছের চারা বুনবো
জমিনের আপাদমস্তক-
বৃক্ষকে ধর্মগ্রন্থ ভেবে
কিংবা আশরাফুল মাকলুকাত ভেবে
করেছি আলিঙ্গন,
জুড়ায় মাটির দেহ, জুড়ায় মন…
আগাম ভরা বর্ষায়
বুকের কলজায় রঙ্গন লাগাবো
সারি সারি…
মানুষকে রেখে বারো হাত দূরে।
তুমি কে?
সকল ঘরের চাবি নিয়ে
বসে আছেন, কে?
আমার মনের বৈঠা হাতে
অচিন দেশে বসত করে, সে কে?
কি করে বলি তাঁরে
হৃদ-মাঝারে
এই যে অনল ধিকিধিকি
আগুন জ্বালো, তুমি কে?
“চারিদিকে এতো জোসনা আনন্দময়ী গান
তবু কেন ভেসে ওঠে-হৃদ আয়নায় শ্বাপদের মুখ?” – খুবখুব ভালো লাগল।
কবিতাগুলো চমৎকার। ভালো লাগল।