একটি গাছকে ১৮৯৮ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা জেমস স্কুইড যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। আজও পাকিস্তানের ল্যান্ডি কোটাল সেনানিবাসে শিকল দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে সেই মহীরুহটিকে।
জেমস মদ্যপ অবস্থায় একদিন বাড়ি ফিরছিলেন। পথের মধ্যে হঠাৎ তিনি দাঁড়িয়ে যান। দেখেন, ওই গাছটি তাঁর দিকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে।
তিনি বারবার গাছটিকে এগিয়ে আসতে নিষেধ করেন। তবু তাঁর নির্দেশ অমান্য করে সেটি এগিয়ে আসতে থাকে তাঁর দিকে। তিনি এক পা দু’পা করে পিছিয়ে এলেও গাছটি কিন্তু থামেনি। যথারীতি এগিয়ে আসতেই থাকে।
তিনি তখন চিৎকার করে ওঠেন— অ্যারেস্ট হিম। তাঁর চিৎকারে সঙ্গে সঙ্গে ব্যারাক থেকে ছুটে আসেন সেনারা। তাঁরা শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলেন ওই গাছটিকে।
কিন্তু গাছটিকে তিনি অ্যারেস্ট করতে বললেন কেন? এই প্রশ্ন করায় তিনি তাঁদের বলেছিলেন, তাঁর দিকে ওই গাছটির এগিয়ে আসার কথা।
না, তাঁর সেই গল্প কেউ বিশ্বাস করেননি। সবাই বুঝতে পেরেছিলেন, আসলে ও রকম কিছুই ঘটেনি। তিনি যা দেখেছেন বলছেন, সেটা আসলে তিনি নেশার ঘোরে ভুলভাল দেখেছেন। কিন্তু সেই কথাটা কেউই তাঁর সামনে মুখ ফুটে বলতে পারেননি।
তাই সে দিন শুধু ওই বটগাছটিকে যাবজ্জীবন বন্দী করে রাখার আদেশ দিয়েই তিনি থেমে থাকেননি, স্থানীয় বাসিন্দাদেরও হুমকি দিয়ে বলেন, কেউ যদি এই গাছটিকে মুক্ত করেন তা হলে তাঁকে এর থেকেও কড়া শাস্তি পেতে হবে। ফলে কেউই আর সাহস করে শিকল দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখা ওই গাছটিকে মুক্ত করার কথা কল্পনাও করেননি।
যিনি আদেশ দিয়েছিলেন তিনি কবেই মরে ভূত হয়ে গেছেন। দেশ ভাগ হয়ে গেছে বহু যুগ আগেই। তবুও এখনও কেউ ওই শেকলটি খোলেননি।
কালের সাক্ষী হয়ে ল্যান্ডি কোটাল সেনানিবাসে আজও বন্দী হয়ে রয়েছে ওই গাছটি। তার গায়ে বড় বড় হরফে লেখা— ‘আই অ্যাম আন্ডার অ্যারেস্ট।