নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শীষমহল এলাকায় গানের আসর থেকে ২১জন বাউল শিল্পীকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার ভোর রাতে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এরপরে দুপুরে মুচলেকা রেখে প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- আকবর সরকার, লিজা সরকার, আমেনা সরকার, শিন্তু সরকার, নদী আক্তার, সাথী সরকার, ময়না সরকার, সাগর, আবু, জাহাঙ্গীর আলম, ইউনুছ, তুহিন, পাপ্পু, পায়েল, ইসমাইল, আনোয়ার হোসেন, তপু চন্দ্র দাস, নয়ন চন্দ্র দাস, সানাউল্লাহ ও সেলিম।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানিয়েছেন, করোনার সময় সব ধরনের লোকসমাগম নিষিদ্ধ সত্ত্বেও বাউল গানের নামে শীষমহল এলাকায় বড় পরিসরের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের ভিতর লোকসমাগম করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২১ জনকে আটক করা হয়। পরে বাউল নেতাদের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে তারা আর গানের আসর বসিয়ে লোকসমাগম করবেনা বলে মুচলেকা দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা দিলীপ কুমার মণ্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলার বাউল গান এখন বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এ স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকো। বিশ্বের ৪৩টি বাক ও বিমূর্ত ঐতিহ্য চিহ্নিত করতে গিয়ে ইউনেসকো বাংলাদেশের বাউল গানকে অসাধারণ সৃষ্টি বলে আখ্যা দিয়ে একে বিশ্ব সভ্যতার সম্পদ বলে ঘোষণা দিয়েছে। বাউলদের অল্পপরিসরে প্র্যাকটিস করার সুযোগ দিতে হবে। বাউল শিল্পীদের আটকের নামে ভয় দেখানো ঠিক হবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বাউল শিল্পীদের নেতা ফরিদ আহমেদ বাঁধন বলেন, বাউল শিল্পীরা শীষমহলে একটি প্র্যাকটিস ঘর তৈরি করেছে। সেখানে শুধু শিল্পীরাই আসেন। পুলিশের আটকের কারণে সহজ-সরল বাউল শিল্পীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শিল্পীদের প্র্যাকটিস করার সুযোগ দিতে হবে।