ব্যাঙ্গালোরের বাসিন্দা রমেশ বাবু বড় কোনও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির সিইও-র মতো রোজ কোর্ট-প্যান্ট পরে, পারফিউম লাগিয়ে একেবারে টিপ-টপ হয়ে নিজের রোলস রয়েলস বা মার্সিডিজে চড়ে সেলুনে গিয়ে চুল কাটেন।
ইনিই ভারতের সব চেয়ে ধনী নাপিত। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির পাশাপাশি তাঁর আছে ৪৫০টি গাড়ি। যার মধ্যে ১২০টিই লাগজারি।
কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হল, এত কোটি কোটি টাকা থাকা সত্বেও তিনি তাঁর সেলুনে চুল কাটার জন্য একজন কর্মচারীও রাখেননি, তিনি নিজেই তাঁর গ্রাহকদের চুল কাটেন।
এই বিপুল সম্পত্তি রমেশ বাবু কিন্তু তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাননি। তিনি নিজে উপার্জন করেছেন।
খুব ছোটবেলায় তিনি খুব কষ্টে কাটিয়েছেন। সামান্য টাকা রোজগারের জন্য বাড়ি-বাড়ি খবরের কাগজ বিলি করেছেন।
ব্যাঙ্গালোরের চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের কাছে তাঁর বাবার একটি সেলুন ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পরে যেহেতু সে তখন খুবই ছোট ছিল, তাই পরিবারের সব দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর মায়ের কাঁধে। তাঁর মা কয়েকটি বাড়িতে ঠিকে কাজের মাসি হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন।
রমেশ বাবু যখন একটু বড় হন, তখন তিনি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যাবসা শুরু করেন। তার থেকে বেশি কিছু টাকা দিয়ে তিনি তাঁর বাবার সেলুনটা নতুন করে সাজান।
সেই ঝাঁ-চকচকে অত্যাধুনিক সেলুনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহক আসতে থাকে। গ্রাহকের সংখ্যা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই এত বেড়ে যায় যে, তাদের সামাল দেওয়ার জন্য তিনি এই ধরনের আরও অনেক সেলুন খুলতে বাধ্য হন।
সেলুনের পাশাপাশি তিনি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবসাও সমান তালে করতে থাকেন। এর পর এই দু’টি ব্যবসার লাভের টাকা থেকে তিনি একের পর এক লাগজারি গাড়ি কিনে ভাড়া খাটাতে শুরু করেন।
এখন তাঁর কাছে ৪৫০টি গাড়ি। তার মধ্যে আছে ৯টি মার্সিডিজ, ৬টি বিএমডাব্লু, একটা জাগুয়ার আর ৩টি অডি। রোলস রয়েলস ভাড়া দিয়ে তিনি এক-একদিনে ৫০ হাজারেরও বেশি টাকা আয় করেন।
রমেশ বাবু কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া সত্বেও তিনি আজও তাঁর বাবার সেলুনে প্রতিদিন দু’-ঘণ্টা করে চুল কাটেন। আর তার জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে নেন মাত্র ১৫০ টাকা।