ইজরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসিকে জল্লাদের সঙ্গে তুলনা করে বিশ্ব নেতাদেরকে তাঁর সঙ্গে পরমাণু আলোচনা করার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
রাইসি গতকাল শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ইরানের সাবেক প্রধান বিচারপতি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫ কোটি ৯০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ২ কোটি ৮৯ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন এবং এই ভোটারদের মধ্যে ৩৭ লাখ ভোটার ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের ব্যালট পেপার নষ্ট করেছেন। (এপি)
তাঁর অনেক বিরোধী প্রার্থীদেরকে প্রার্থী হওয়ায় অনুপযুক্ত ঘোষণা করায় তাদের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে যাননি।
রাইসির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে।
১৯৮৮ সালে হাজার হাজার সরকার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করার জন্য রাইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। হত্যাকাণ্ডে নেতৃস্থানীয় ৪ জন ব্যক্তির মধ্যে তিনি ১ জন বলে উল্লেখ করেছেন হোসেন আলী মোন্তাজেরি – তৎকালীন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খামেনির সহকারী – তাঁর স্মৃতিকথায়।
মোন্তাজেরির মতে ২,৮০০ থেকে ৩,৮০০ লোককে হত্যা করা হয়। সংখ্যাটি অন্যদের মতে ৩০,০০০ এর মত। (উইকিপিডিয়া)
এব্রাহিম রাইসির ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন থেকে কয়েকটি বিষয় প্রতীয়মান হয় যে, প্রথমত, নির্বাচনটি অবাধ হয়নি, কেননা অনেক শক্তিশালী প্রার্থী এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের প্রার্থিতা পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে এবং এর ফলে ব্যাপক জনগোষ্ঠী নির্বাচনে ভোট দানে বিরত থেকেছে। আবার একটা বড় অংশ মনে হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যালট নষ্ট করেছে। এটা পরিষ্কার যে, রাইসি ইরানের সুপ্রিম লিডার আলী খামেনির প্রিয়পাত্র।
বোঝা যাচ্ছে ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে একটা সংকট বা অসন্তোষ চলছে। ইরানের জনগণ কতটা তাঁর আনুগত্য করে তা সামনের দিনগুলোতে দেখা যাবে।
পাশাপাশি, আন্তর্জাতিকভাবে রাইসিকে পশ্চিমা বিশ্ব গ্রহণ করবে না বলে দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১৯৮৮ সালে হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্যে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছে। উল্লেখ্য, যে ৪ সদস্যের বিচারপতি এই গণ মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম।
ওয়াশিংটন তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে। দেখার বিষয়, তিনি নেতৃত্বে থাকাকালীন বাইডেন ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসে কিনা যে চুক্তি থেকে ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে এসেছিল ২০১৮ সালে।